আটদিনের লড়াই শেষ। চিকিৎসকদের সমস্ত লড়াই, বাবা-মা’র প্রার্থনা সব ব্যর্থ করে আজ ভোরে মারা গেছে পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় জখম ছাত্র ঋষভ সিং। আরেক গুরুতর জখম ছাত্র দিব্যাংশ ভগত এখনও জীবনযুদ্ধ জারি রেখেছে। আগের থেকে এখন বেশ খানিকটা ভালো আছে দিব্যাংশ। মায়ের ডাকেই জ্ঞান ফিরেছে আরেক খুদের। চোখ খুলে মা বলে ডাকল দিব্যাংশ।
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলকারে চড়ে স্কুলে যাচ্ছিল দিব্যাংশ। তার পুলকার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পোলবার কাছে দিল্লি রোডে তাদের গাড়ি পোস্টে ধাক্কা মেরে নয়ানজুলিতে উলটে যায়। ফুসফুসে কাদাজল ঢুকে যায় শিশুর। তাকে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এসএসকেএমের ট্রমা সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয় দিব্যাংশকে। গ্রিন করিডরের মাধ্যমে এক ঘণ্টারও কম সময় এসএসকেএমে পৌঁছয় সে। ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাকে। তবে ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় দিব্যাংশর। বৃহস্পতিবার আংশিক ভেন্টিলেশন সরিয়ে দেওয়া হয় তার।
এসএসকেএম সূত্রে খবর, কৃত্রিম উপায় ছাড়া নিজেই শ্বাস নিতে পারছে দিব্যাংশ। আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাকে। শুক্রবার ওয়ার্ডে ঢুকে দিব্যাংশুর সঙ্গে দেখা করেন তার মা রিমা ভগত। ছেলের ডাকনাম ধরে ডাকেন তিনি। সাড়া দেয় দিব্যাংশু। ‘মা’ বলে ডাকেও সে। ছেলের শারীরিক উন্নতি হওয়ায় যথেষ্ট খুশি দিব্যাংশর মা। তিনি বলেন, “ওয়ার্ডে ঢুকে ওর গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। একটু ডাকতেই ও আমার দিকে তাকায়। আমি বলি ‘মা’ বলে ডাকতে। ও আমার দিকে তাকায়। ‘মা’ বলে ডাকে।” ছেলের মুখ থেকে আবারও ‘মা’ ডাক শুনতে পেয়ে বেজায় খুশি জখম ছাত্রের মা।
তবে ছেলের শারীরিক অবস্থার উন্নতির খুশির মাঝেও মনখারাপ দিব্যাংশের বাবা-মায়ের। আজ ভোরে ঋষভের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরে তার বাবার পাশে এসে চুপ করে দাড়িয়েছিলেন দিব্যাংশের বাবা। সদ্য সন্তানহারা সন্তোষ সিংকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি নিজেও। ভেজা চোখে বললেন, “আমার ছেলে বন্ধু হারাল। দু’জনে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরলে ভাল লাগত।”