সারা পৃথিবীর ২০ টি দেশে ঝুঁকি রয়েছে করোনা সংক্রমণের। যার মধ্যে ভারত রয়েছে ১৭ নম্বরে। উল্লেখ্য, ভারতীয় কয়েকজন আক্রান্তও হয়েছিলেন এই সংক্রমণে। আবার করোনা আশঙ্কায় কয়েকজনের ওপর নজরও রাখা হয়েছিল। চিন থেকে বিমানে ও জাহাজে করে আনা হয়েছে ভারতীয় নাগরিকদের। এই মুহূর্তে দেশে করোনা আক্রান্তের খবর নেই।
এদিকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে চিংড়ি, কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ চিনে। আর এতেই মাথায় হাত পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের চাষিদের। সংসার চালাতে জেরবার হতে হচ্ছে বলে দাবি চাষিদের। ক্ষতির পরে ক্ষতি। লাভ তো দূরে থাক, পড়তে হচ্ছে চূড়ান্ত লোকসানের মুখে।
পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা কাঁকড়া, চিংড়ি চাষের জন্য বিখ্যাত। তা স্থানীয় অঞ্চলে বিক্রি করে লাভ হয় সামান্যই। তবে চিনে চাহিদা ছিল চিংড়ি ও কাঁকড়ার। তা রপ্তানি করে ভালো লাভ হতো চাষিদের। এক কেজি কাঁকড়া বিক্রি হতো প্রায় ১৪০০ থেকে ২০০০ টাকায়। চিংড়ির দাম এখানে প্রায় কেজি প্রতি ৪৫০ থেকে শুরু। তবে চিনে রপ্তানি করলে পাওয়া যেত কম করে ৬৫০ টাকা।
করোনা আতঙ্কে বন্ধ রপ্তানি। দালাল মারফৎ কোনওরকমে মাঝে মধ্যে বিক্রি করা গেলেও দাম মিলছে অর্ধেকেরও কম। অথচ বাড়তি লাভের আশায় চাষ করা হয়েছিল ভালই। তা বিক্রি না হওয়া মানে নষ্ট। দেখতে হবে বড়সড় লোকসানের মুখ। এই নিয়েই আতঙ্কে চাষিরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের মাছ বিক্রেতা অর্ণব পণ্ডা বলেন, চিনে রপ্তানি বন্ধ। নষ্ট হওয়া থেকে চিংড়ি বাঁচাতে গেলে জলের দামে সব বিক্রি করে দিতে হবে। তাতে অন্তত সামান্য কিছু টাকা আসবে। দিঘার কাঁকড়া বিক্রেতা রঞ্জন মাইতি বলেন, করোনা আতঙ্কে চিনে কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে কাঁকড়া কিনছে না চালানকারিরা। বড়সড় ক্ষতির মুখ দেখতে হচ্ছে।
বিশ্বের কাছে এই মুহুর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নভেল করোনাকে প্রতিহত করা। চিনের সরকারের তথ্য অনুযায়ী এই ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১০০০ জনের। আক্রান্ত প্রায় ২৭০০। ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ২৬০০ জন। অবশ্য চিনের বেসরকারি তথ্য বলছে অন্য কথা। সেই তথ্য অনুযায়ী এই ভাইরাসের ফলে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৫০০০-এরও বেশি।
মনে করা হচ্ছে, চিনের উহান শহর থেকেই প্রথম সংক্রমণ হয়েছে এই রোগের। শহরের সামুদ্রিক মাছ ও প্রাণীর মাংসের বাজার থেকেই শুরু হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণ। আপাতত তাই চিংড়ি ও কাঁকড়া রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চিন। তবে আমেরিকা থেকে গবেষকদের একাংশের দাবি, চিনের ওই বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়নি।