মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ কর্তাদের বৈঠকে ডাকার কর্মসূচি ঘিরে দিনভর ছিল টানটান উত্তেজনা। জরুরি নোটিশে জেলার পুলিশ কর্তাদের বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই বৈঠকে প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল বাংলায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি বিষয়। পুলিশ কর্তাদের সর্বদা চোখ কান খোলা রাখার পরামর্শ দেন মমতা। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সম্ভাব্য কারণটা কী! হলও তাই। রাজ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎকর পুরকায়স্থ ও ডিজি বীরেন্দ্র।
এদিনের বৈঠক নিয়ে ১৬ আনা গোপনীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা করে নবান্ন। কনফারেন্স রুমের আশপাশে কোনও সাংবাদিককে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। বৈঠকের পরে কোনও সাংবাদিক বৈঠকও হয়নি। কিন্তু সূত্রের খবর, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও চরমপন্থী সংগঠনকে সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া চলবে না। একান্তই তা যদি দিতে হয় তা হলে ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাঁরা সবুজ সঙ্কেত দিলে তবেই অনুমতি দেওয়া যাবে। পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া নজর রাখার ব্যাপারেও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যাতে কোনও উস্কানি না ছড়ায় তার জন্য প্রতিনিয়ত মনিটরিং করার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়াও সুনির্দিষ্ট ভাবে কতগুলি বিষয়ে পুলিশ কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “লোকাল থানার অনেক অফিসার রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশ করছেন। এসব চলবে না। ঝাড়খণ্ড, বিহার সীমান্ত দিয়ে লোকজন ঢুকে পড়ছে । এলাকায় অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। থানার কাছে আগাম খবর থাকছে না কেন?” এছাড়াও পুলিশ যেন আরও সোর্স বাড়ানোর চেষ্টা করে সেই নির্দেশেও দেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাড়ানোর কথাও বলেছেন।
বাংলায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি লাগানোর চেষ্টা যে হতে পারে সে ব্যাপারে লোকসভা ভোটের আগে থেকেই উদ্বেগে রয়েছে নবান্ন। সম্প্রতি তিনটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তৃণমূল তিনটিতেই জিতে যাওয়ার পর সেই আশঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে শাসক দলে। উপনির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর বিজেপি আরও অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে পারে। রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে তীব্র ধর্মীয় মেরুকরণের পথে হাঁটতে পারে তারা। এমনই আশঙ্কা করছে তৃণমূল নেতারা।