উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের ভোগ্রামের মাদ্রাসা পরিচালন কমিটির ভোট ঘিরে বাংলায় যে সমীকরণ দেখা গেল, তা দেখেই বোঝা গেল বাংলায় ভোটের দামামা বেজে গেছে। বাংলার নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য হায়দ্রাবাদের কট্টর মুসলিমদের দল অল ইন্ডিয়া মজলুলিস-ই-ইত্তেহাদুল-মুসলিমিন তথা মিমও প্রার্থী দেয়। তৃণমূলের সঙ্গে জোর টক্কর ছিল। তবে শেষ হাসি দেখা দিল বাংলার শাসক দলের মুখে।
এই ভোটে বিজেপি নাকি প্রার্থীই খুঁজে পায়নি। উল্টে বাম-কংগ্রেস জোটের প্যানেলকে জেতানোর জন্য পদ্ম শিবির তলায় তলায় প্রচার করেছিল বলে খবর । কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির ছ’টি আসনেই বিপুল ভোটে জিতল তৃণমূলের প্রার্থীরা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলায় তৃণমূলের সমর্থনের ভিতটাই সংখ্যালঘু ভোট। আর সেখানে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল যদি সেই ভোটে ভাগ বসায়, তাহলে সুবিধে হবে বিজেপির। দলের কোর কমিটির বৈঠকে মমতা বলেছিলেন, “মিম হইতে সাবধান হোন। ওরা কিন্তু বিজেপির বি-টিম।” তারপর কোচবিহারের কর্মীসভায় বলেছিলেন, “ওরা বিজেপির কাছে টাকা নেয়। সংখ্যালঘুরা ভুল করবেন না। ওদের বাড়ি হায়দরবাদে। এখানে নয়।”
পর্যবেক্ষকদের মতে, হেমতাবাদ একটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চল। সেখানে মিম যদি মাদ্রাসা কমিটির ভোটে ভাল ফলাফল করত এবং শাসক দলের প্যানেল যদি সত্যি সত্যিই ধাক্কা খেত, তাহলে এটাকেই বাংলার মডেল করে তুলতে বাংলায় আরও মনোনিবেশ করত হায়দরাবাদের নিজামের হাতে তৈরি দলটি। এমনিতেই বাংলা লাগোয়া বিহারের কিষাণগঞ্জ আসন জেতার পর উত্তরবঙ্গে সংগঠন গোছানোর কাজ শুরু করেছে মিম। কোচবিহার শহর ছেয়ে গিয়েছে মিমের হোর্ডিং-এ। তবে পর্যবেক্ষকদের আরও বক্তব্য, এটা ছিল মিমের আত্মপ্রকাশ। এর মানে এই নয় যে মিম আগামী দিনে বাংলায় জমি শক্ত করার কাজ থামিয়ে দেবে। ভবিষ্যতে কী হবে সেটা কেউই বলতে পারে না।
রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, এই ফলাফল দেখে হয়তো সার্বিক পরিস্থিতি আন্দাজ করা যাবে না। তবে এটা বোঝা যাচ্ছে যে, বাংলার সংখ্যালঘুরা মনে করছেন, তৃণমূলই তাঁদের পরীক্ষিত বন্ধু। বিজেপিকে ঠেকাতে পারলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলই পারবে।