লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে রাম-বাম আঁতাত নিয়ে সরব হয়ে হয়েছিলেন তৃণমূল। সেই অভিযোগ যে খুব একটা ভুল নয় তা প্রমাণ পাওয়া গেছে নির্বাচনের ফলাফলেই। বামেদের অধিকাংশ ভোটয়েই ভরেছে রামেদের ভোট ব্যাঙ্ক। এইবার আরও একবার একই অভিযোগ তুললেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। করিমপুরের সভায় এসে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘এক সময় ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ে এখন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে এই দলটি।’
এদিন থানারপাড়া থানার চরনবীন গ্রামে একটি সভায় অংশ নেন তিনি। সেই সভায় ফিরহাদ ছাড়াও ছিলেন স্থানীয় সাংসদ, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ আবু তাহের খান, সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহা ও প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহরায় উপস্থিত ছিলেন। এই সভায় কলকাতার মেয়র বলেন, ‘প্রথমবার ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদি হাজার এক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দু’লক্ষ মানুষের চাকরি হবে। বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। কিন্তু পঁাচটি বছর তাঁরা কিছুই করতে পারেননি। এবারে যখন লোকসভার ভোট হল, সেখানে পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে নির্বাচনে গেলেন। মানুষের আবেগ কুড়িয়ে ফের ক্ষমতায় এসেছেন। তাঁদের কাজই হল সাম্প্রদায়িকতার কথা বলে মানুষের মধ্যে বিভাজন ঘটানো। আর তাঁদেরই সঙ্গে সঙ্গ দিয়েছে এই সিপিএম। বিজেপি’র টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সিপিএম দলটা। এমনিতেই তো সিপিএম দলটার বাংলায় আর কোনও অস্তিত্ব নেই। অন্যদিকে, বিজেপি–র নেতৃত্বে যঁারা বাংলায় আছেন, তাঁদের কোনও গুরুত্বই নেই। ভুলভাল কথা বলতে পারদর্শী তাঁরা। কখন কী বলেন, তাই জানেন না।’
করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিগত ৩৯ বছরে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সিপিএম কোনও দিনই কোনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে বিধানসভা আসনে লড়ার জন্য প্রার্থী করেনি। এবার তঁারা বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছে। এবার প্রার্থী মনোনয়নেও সেই কৌশল নিয়েছে। সিপিএমের সংখ্যালঘু প্রার্থী আমাদের সংখ্যালঘু ভাইদের কিছু ভোট কাটলে বিজেপি–র সুবিধা হবে। গোপনে সিপিএম বিজেপি–র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আমরা জাতপাত বুঝি না। দেশে হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে থাকবে।’
এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে তিনি বিজেপি–র বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘এনআরসি বাংলায় হবে না। আমরা বাংলায় এনআরসি হতে দেব না। মমতা ব্যানার্জি যতদিন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, ততদিন বাংলায় এনআরসি হবে না। আসলে এনআরসি নিয়ে বিজেপি বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। এনআরসি ইস্যু নিয়ে তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রচার করতে চাইছে। কিন্তু বাস্তবে হিন্দুদেরই সমস্যায় ফেলছে তারা।’ এই উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে তিনি দাবি করেন। রাম-বাম আঁতাত ভেঙে যাবে বলে জানান তিনি।