জমা জল পরিষ্কার করতে গেলে প্রশাসনের লোকেদের যদি বাধা দেন কোনও বাড়ির মালিক, তা হলে দরজা ভেঙেই সেখানে ঢুকে জমা জল পরিষ্কার করতে হবে। এবং সে কাজে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, তা মেটাতে হবে বাড়ির মালিককেই। রাজ্যকে ডেঙ্গিমুক্ত করতে এবার এমনই কড়া দাওয়াই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার মালদা কলেজ অডিটোরিয়ামে জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই রাজ্যে ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব নিয়ে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডেঙ্গি প্রতিরোধে তাঁর নির্দেশ, ‘বাড়িতে যদি কেউ ঢুকতে না দেয়, তা হলে দরজা ভেঙেই সেখানে ঢুকবে প্রশাসনের লোকেরা। বাড়ির মধ্যে জমা জল থাকলে সেটা পরিষ্কার করে দেবে। তার জন্য যে অর্থ খরচ হবে সেটা বিল আকারে সেই বাড়ির মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই টাকা মেটাতে হবে বাড়ির মালিককেই।’ এর পাশাপাশি, ডেঙ্গি নিয়ে বিরোধীদেরও একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি দেখান বিগত সরকারের জমানায় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ এবং মৃত্যু বেশি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৯৫ সালে ম্যালেরিয়ায় রাজ্যে মারা গিয়েছিল ৮৭। ১৯৯৬, ’৯৭, ’৯৮, ’৯৯ সালে যথাক্রমে ৫৬, ৯৪, ৭৭, এবং ১৪৪ জনের মৃত্যু হয়। তাঁর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী তার পরও মৃত্যু মিছিল অব্যাহত ছিল। ২০০১ সালে ১৯১, ২০০২ সালে ১৫২, ২০০৩ সালে ২১৪ জন মারা যান। ২০০৮-এ মৃত্যের সংখ্যা ছিল ১০৪। সেখানে এ বছর এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা ২৩ জন। তবে একইসঙ্গে তিনি এ কথাও বলেন, ‘কোনও মৃত্যুই কাম্য নয়।’
মশার দাপটকে তিনি যে খাটো করে দেখছেন না, তাও স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। অভিযোগ, বিএসএফ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় অফিসে মশা নিধনের কাজে নিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘নিজেরাও পরিষ্কার করছে না, সরকারি কর্মীদেরও কাজ করতে দিচ্ছে না। আমার গাফিলতির জন্য অন্যরা কেন ভুগবে? বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসগুলি জল জমিয়ে রাখছে।’ ডেঙ্গির চিকিৎসার জন্য সাধারণ মানুষকে বেসরকারি হাসপাতাল নার্সিংহোমে না গিয়ে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।