এনআরসির জেরে আসামে এক ধাক্কায় ঘরছাড়া হয়েছেন ১৯ লক্ষ মানুষ। এবার বাংলাতেও এনআরসি করার হুঙ্কার ছেড়েছে বিজেপি। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলে দিয়েছেন বাংলায় এনআরসি হবে না। বিজেপির ওই হুঙ্কারের পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছেন বহু মানুষ। প্রাণও হারিয়েছেন অনেকে। এবার খানাকুলে এনআরসি আতঙ্কে ফের প্রাণ হারালেন এক যুবক।
মৃতের নাম উত্তম হাজরা (৩৮)। পেশায় দিনমজুর। মৃতের স্ত্রী শ্যামলী হাজরা জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে চারদিকে সবাই বলছে বাড়ির কাগজপত্র না থাকলে এখানে আর থাকতে দেবে না কেন্দ্রীয় সরকার। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবে। তাই বেশ কয়েকদিন ধরে বাড়ির দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র খোঁজাখুঁজি করছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও কাগজপত্র খুঁজে পাননি। তাই কয়েকদিন ধরে চিন্তা করছিলেন। এরপরই মঙ্গলবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়। তিনি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন। এখন তাঁর মৃত্যুর পর সংসার কীভাবে চলবে বুঝতে পারছি না। এই দুটো ছোট ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে আমি কোথায় যাব?’
খানাকুল দু’নম্বর ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নূর নবী মণ্ডল বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলছেন এ রাজ্যে এনআরসি হবে না। যতদিন তৃণমূল ক্ষমতায় আছে ততদিন কেউ এখানে এনআরসি করতে পারবে না। আমরাও গ্রামে গ্রামে প্রচার করছি। কিন্তু সাধারণ মানুষ কাগজে, টিভিতে রোজ অসমের ঘটনা দেখছেন। তার ওপর সাম্প্রদায়িক বিজেপি এনআরসি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তার জেরেই সাধারণ মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। শুনেছি উত্তম বাড়ির কাগজপত্র খোঁজাখুঁজি করছিল। কাগজপত্র না পাওয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার।’