তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। উপকূল থেকে ৩১০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থান করছে এটি। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে বুলবুল। পরিস্থিতি এখন এমন যে উপকূলবাসীর মনে ফিরে আসছে আয়লার স্মৃতি। এমনকী এও মনে করা হচ্ছে, আয়লার ভয়াবহতাকেও টপকে যেতে পারে বুলবুল। শনিবার মধ্যরাতে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার কথা ছিল স্থলভাগে। কিন্তু সকালে বুলবুল যেভাবে শক্তি সঞ্চয় করে এগিয়ে আসছে, তাতে মনে করা হচ্ছে শনিবার সন্ধের পরই স্থলভাগে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। পরিস্থিতির মোকাবিলায় নবান্ন থেকে খোলা হল কন্ট্রোল রুম। রয়েছে হেল্প-লাইন নম্বরও৷
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের মোকাবিলায় পুরোপুরি প্রস্তুত নবান্ন ও কলকাতা পুরসভা৷ ইতিমধ্যেই আগামী শনি ও রবিবার পুরকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে৷ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল৷ তাছাড়া ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে কন্ট্রোল রুম৷ পুরসভার কন্ট্রোল রুমের তদারকি করবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজেই৷
শনিবার সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গিয়েছে জেলাগুলিতে। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় আগামিকাল শনিবার দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, সুন্দরবন, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও কলকাতা-সহ বেশ কয়েকটি জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নবান্নে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। কন্ট্রোল রুমের নম্বর- ২২১৪৩৫২৬ ও ২২১৪৩৫৮৬। এছাড়াও চালু হয়েছে টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০। যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার উপকূলবর্তী ব্লক এলাকায় প্রায় ৩০০ টি ফ্লাড সেন্টারকে তৈরি রাখা হয়েছে। এছাড়া , বন দফতর, পুলিশ কর্মীদের, সেচ দফতরকেও পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় ফেরি পরিষেবা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, শনিবার মাঝ রাতে বা রবিবার সুন্দরবন, সাগরদ্বীপে আছড়ে পড়বে এই ঝড়। তখন তার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০-১৩৫ কিলোমিটার৷ এর ফলে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে সুন্দরবন এলাকা৷ আয়লা আতঙ্ক এখনও স্পষ্ট মনে রেখেছে সুন্দরবনবাসী। তাই ঝড় মোকাবিলায় কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না প্রশাসনের তরফেও। খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।