সাইবার প্রতারণার আখড়া চলছিল কলকাতায়। কল সেন্টারের আড়ালে চলত দুনিয়া জুড়ে লোক ঠকানোর ডিজিটাল কারবার। কয়েক হাজার লন্ডনবাসীকে বোকা বানিয়ে লক্ষ লক্ষ পাউন্ড হাতিয়ে নিচ্ছিল এই চক্র। ২৩ হাজার নাগরিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন লন্ডন পুলিশে। তারা তদন্তে নেমে দেখেন, সবটাই হচ্ছে কলকাতায় বসে। জানানো হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে। ঠিক তিন দিনের মধ্যে ওই চক্রের কিনারা করে ফেলে কলকাতা পুলিশ। আগেই ফোন করে লন্ডন পুলিশের কর্তারা কলকাতার নগরপালকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। এবার এল লিখিত চিঠি।
মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মাকে অভিনন্দন জানিয়ে লন্ডন থেকে চিঠি এল লালবাজারে। বুধবার তা গর্বের সঙ্গে টুইট করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। এর আগে লন্ডনের পুলিশ কমিশনার ক্রেসিডা ডিক লালবাজারে ফোন করেছিলেন। লন্ডন পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া হাজার হাজার অভিযোগের কিনারা করার জন্য কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মাকে ধন্যবাদ জানান লন্ডনের পুলিশ কমিশনার। তবে কলকাতা বা সল্টলেক ছাড়াও শিলিগুড়ি, বেঙ্গালুরু, নয়ডায় তৈরি হওয়া ভুয়া কলসেন্টার থেকেও এই ধরনের প্রতারণা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।এই চিঠি সম্পর্কে বলতে গিয়ে যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) বলেন, “আমার যেটা কাজ সেটা আমি করেছি। তবে লন্ডন সিটি পুলিশের এই চিঠি নিঃসন্দেহে আমার টিমকে আরও উজ্জীবিত করবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার দু’টি জায়গায় ভুয়ো কলসেন্টার তৈরি করে কলকাতায় বসে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করা হয়। শহরের দু’টি কলসেন্টারে হানা দিয়ে মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের সাইবার থানার পুলিশ আধিকারিকরা। বহুজাতিক কম্পিউটার নির্মাতা সংস্থার ভারতীয় অংশের এক কর্তা দিল্লি থেকে লালবাজারে জানান যে, তাঁদের ওই আন্তর্জাতিক সংস্থার নাম করে কলকাতা থেকে বেশ কয়েকজন লন্ডন ও বিদেশের অন্য কয়েকটি জায়গায় ফোন হয়। তাঁদের কম্পিউটারে ভাইরাস ঢোকানোর হুমকিও দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাস ঢুকিয়ে তাঁদের কম্পিউটারের সিস্টেম বিগড়ে দেওয়ার পর বলা হয়, পর্যাপ্ত টাকা পেলে তারাই তা সারিয়ে দেবে। এভাবে শুধু লন্ডনের ২৩ হাজার বাসিন্দাকে প্রতারণা করা হয়।