লোকসভা ভোটের আগের থেকেই বাংলা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস স্থাপনের চেষ্টা করেছে বিজেপি। নির্বাচনের এত দিন বাদেও তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতীদের দ্বারা। এবার ঘটনাস্থল কেশপুর।
বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় সন্ন্যাসী। শনিবার সন্ধেয় কলকলি গ্রামে তৃণমূলের কর্মিসভা সেরে রাত ১০টা নাগাদ মোটরবাইকে চড়ে নিজের বাড়ি থারুর গ্ৰামে ফিরছিলেন। কলকলি গ্রামের একটি বাঁশ ঝোপের আড়ালে লুকিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। অন্ধকারে সেসব টের পাননি সঞ্জয়। কাছে আসতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে তারা। গুলি লাগে তাঁর বাম উরুতে। এর পর আরও কয়েকটি গুলি ছুটে আসে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি পাশের একটি ঝোপে লুকিয়ে পড়েন।
গুলির শব্দে ছুটে আসেন গ্রামের মানুষজন এবং তৃণমূল কর্মীরাও। রাতেই গুলিবিদ্ধ সঞ্জয়কে উদ্ধার করে তৃণমূল কর্মীরা প্রথমে কেশপুর ব্লক হাসপাতালে, পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করেন। রবিবার সকালে তঁার অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এর পর বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এবং সিপিএমের হার্মাদরা হামলা চালায় কেশপুরের বনকাটা গ্ৰামে। সেখানে তৃণমূলের বুথ কার্যালয়ে একটি দলীয় সভা চলছিল। সভা প্রায় শেষের মুখে এসময়ই তাঁরা হামলা চালায়। হামলাকারীরা সব সশস্ত্র থাকায় আত্মরক্ষা করতে কোনও রকমে পালিয়ে যান তৃণমূল কর্মীরা।
কেশপুরে তৃণমূল নেতা খুন, তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলা, পার্টি অফিস ভাঙচুর–সহ একাধিক অভিযোগে শনিবার রাতেই কেশপুরের আমড়াকুচি থেকে বিজেপি নেতা তন্ময় ঘোষ ও শেখ জাহাঙ্গিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তন্ময় ঘোষ আগে সিপিএম নেতা ছিলেন।
কেশপুরের তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিক জানান, বিজেপি–র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আর পুলিশ সুপার থেকে বিজেপি নেত্রী হওয়া ভারতী ঘোষ প্রায় কেশপুরে আসছেন। তৃণমূল কর্মীদের আর পুলিশকে মারধরের কথা বলছেন। তঁারা ফিরে যাওয়ার পরই বিজেপি–র দুষ্কৃতীরা আর সিপিএমের হার্মাদরা এক হয়ে বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। উৎসবের মরশুমেও হামলা বন্ধ নেই। মানুষ যখন উৎসবের আমেজে ব্যস্ত, ঠিক সেই সময়ই অতর্কিতে হামলা চালানো হচ্ছে। ষষ্ঠীর দিন কেশপুরের গরগোজপোতা গ্ৰামে বিজেপি দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন তৃণমূল নেতা শেখ মনুয়ার আলি।
রফিকের হুঁশিয়ারি, ‘আমাদের কর্মীরা এখনও সংযত রয়েছেন। কেশপুরে কোনওদিনই বিজেপি–র কোনও কর্মী বা সংগঠন ছিল না। সিপিএমের হার্মাদরাই তাদের ডেকে এনেছে। ভুললে চলবে না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। হামলাকারীরা যতই শক্তিশালী হোক কেউ ছাড় পাবে না।’