বিজয়া পেরিয়ে গেলেও বাঙালির উৎসবের কার্নিভাল এখনও বাকি। সেই বিশেষ শোভাযাত্রাকে ঘিরে এখন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন কলকাতা ও শহরতলীর বড় পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। আগামীকাল, শুক্রবার বিকেল চারটেয় রেড রোডে শুরু পুজোর কার্নিভাল। বিসর্জনের বিশেষ শোভাযাত্রা। এ বছরে শেষবারের মতো প্রতিমা দেখার সুযোগ।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই কার্নিভাল এখন কলকাতার মেগা ইভেন্ট। যেখানে ৮০টি প্রতিমা শোভযাত্রা করে নিরঞ্জনের দিকে এগিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কাছে কলকাতার পুজোকে তুলে ধরার জন্যই এই কার্নিভাল। এর জন্য বিদেশি পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলার নিজস্ব শিল্প টেরাকোটার মঞ্চ তৈরি হয়েছে রেড রোডের ধারে। যেখানে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী তো বটেই, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার-সহ বিশিষ্ট অতিথিরা। ঠিক উল্টোদিকের মঞ্চে বসবেন বিদেশি অভ্যাগতরা। থাকবেন বিভিন্ন দূতাবাসের কনসাল জেনারেলরা। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদেশি অতিথিদের সামনে বাংলার সেরা উৎসবকে তুলে ধরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান লক্ষ্য।
এই শোভাযাত্রার জন্য বদলে গিয়েছে ধর্মতলা চত্বর। আলোর মালায় ঝলমল করছে শহরের কেন্দ্রস্থল। তুলে ধরা হয়েছে রাজ্যের জনমুখী প্রকল্পগুলিও। যেমন কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, খাদ্যসাথী, সবুজশ্রী, সমব্যাথী, এমনকী দিদিকে বলো বোর্ডও রয়েছে। এছাড়া আলোর রোশনাইয়ে ফুটে উঠেছে দেবদেবীর মূর্তি। ফোর্ট উইলিয়াম থেকে আকাশবাণী পর্যন্ত আলোয় সেজেছে। পাতা হয়েছে কয়েক হাজার চেয়ার। রাস্তার দু’ধারে দুটি মঞ্চ। যেখানে ৮০ থেকে ১০০ জন বসতে পারেন। পূর্ব দিকের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল বসবেন। এছাড়াও রাজ্যের মন্ত্রীরা বসবেন। থাকবেন বিশেষ অতিথিরা। পাশের মঞ্চে বসবেন কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। আর পশ্চিম দিকের মঞ্চে বসানো হয়েছে এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন। এছাড়াও থাকছে আরও দুটি এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন। পশ্চিমদিকের মঞ্চে বসবেন যে সমস্ত অভিনেতা-অভিনেত্রী বা সঙ্গীতশিল্পী, বিভিন্ন পুজো কমিটির শোভযাত্রায় অংশ নেবেন তাঁরা।
গতবছর নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে মুম্বইয়ের সঙ্গীতশিল্পী অভিজিৎ, চেতলা অগ্রণীতে অদিতি মুন্সি ছিলেন। এবারও চমক দেবে বিভিন্ন পুজো কমিটি। সুরুচি সঙ্ঘের পুজোতেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থিম সংয়ের সঙ্গে শিল্পীরা নাচ করবেন। যেসব পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় অংশ নেবে, তাদের যা থিম ছিল, তা তুলে ধরার প্রস্তুতি চলছে। তবে তা গান-নাচের মাধ্যমে তুলে ধরতে সময় পাওয়া যাবে মাত্র দু’মিনিট। ৫০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে আসতে পারবে পুজো কমিটিগুলি। বুধবার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে পুলিশকর্তারা জানিয়ে দেন, দুটি ট্রেলারে প্রতিমা নিয়ে আসতে হবে। একজন করে সার্জেন্ট প্রতিটি পুজো কমিটির প্রতিমা পাইলট করে আনবেন।
এই মেগা ইভেন্টকে ঘিরে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে। গোটা চত্বর সিসি ক্যামেরায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে। নজরদারিতে থাকছে ড্রোন। কয়েক হাজার পুলিশকর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন।