পুজোর আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলা সহ গোটা দেশে। এরমধ্যেই ৩ অক্টোবর অর্থাৎ আগামীকাল থেকে চার দিনের সরকারি সফরে ভারতে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে থাকছে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম সম্মেলনে অংশ নিতে ভারতে আসছেন হাসিনা। ৫ তারিখ তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও কথা হবে তাঁর। এমনকি দেখা করবেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গেও।
সদ্য নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন হাসিনা। সেখানেই দুই প্রধানের মধ্যে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আব্দুল মোমেন জানান, নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাসিনা। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছেন, এনআরসি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।
সূত্রের খবর, অমিত শাহ-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বারবার ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বিতরণের’ হুঙ্কারে বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে পড়েছে আওয়ামি লিগ সরকার। এহেন পরিস্থিতিতেই, গতকাল পশ্চিমবঙ্গে পুজোর উদ্বোধনে এসে ফের নাগরিকপঞ্জি করার কথা বলে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হাসিনার সঙ্গে মোদীর বৈঠকে অবশ্যই উঠে আসবে এনআরসি প্রসঙ্গ।
এদিকে, নয়াদিল্লি ও কলকাতার চলা রাজনৈতিক চাপানউতোরের উপর কড়া নজর রাখছে ঢাকা। বাংলায় এনআরসি হলে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’দের কোথায় রাখা হবে? তাদের কি বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকার নীতি নির্ধারকদের মাথায়।
অন্যদিকে, নাগরিকপঞ্জিতে ‘অনুপ্রবেশকারী’ শনাক্ত করা গেলেও তাদের নিয়ে কী করা হবে, এই বিষয়ে নিরুত্তর নয়াদিল্লী। পাশাপাশি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বিপাকে থাকা বাংলাদেশ কী আরও চাপ নিতে রাজি হবে, সেই প্রশ্নের উত্তরও মিলছে না। ফলে মোদী-হাসিনার বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং নয়া সমীকরণ তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।