অনিমেষ, তৈয়ব, পিংকিরা ছুটছে স্কুলে পড়ার টানে। এঁদের মধ্যে অনেকেরই দুবেলা ঠিক করে খাওয়া অভাব পরিবারে। তবুও তাঁরা স্কুলমুখী। এঁদের এই প্রবণতা বাড়াতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন কেশপুরের রাঙাদিঘি প্রাথমিক স্কুলের দুই শিক্ষক। ছাত্রছাত্রী স্কুলছুট হওয়ার ভাবনা ভুলে ওঁদের মূল ভাবনা কিভাবে স্কুলকে আরও সুন্দর করে তোলা যায়। কিভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের মনের মতো করা যাবে শ্রেণিকক্ষ। এই বিদ্যালয়ের দেওয়াল জুড়ে আছে ছবি, ছড়া-সহ বিভিন্ন আকর্ষণের ভান্ডার। শিশুদের ‘আদর্শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষ্য তাঁদের।
শিক্ষকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেশপুর চক্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক শৈলজা চন্দ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘আমরা সমস্ত স্কুলকেই সুন্দর করতে বলি। কিন্তু রাঙাদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে ভাবে নিজেদের উদ্যোগে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছেন তা সত্যি অভিনন্দন যোগ্য।’ তিনি বলেন, ‘এর জন্য কোনও বাড়তি টাকা বরাদ্দ করা হয় না স্কুলকে। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে স্কুলকে সাজিয়েছেন। পুরোটা শিক্ষকদের নিজেদের উদ্যোগে।’
কেশপুর ১০ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত এই স্কুল। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। একটি জীর্ণ পুরাতন স্কুল বিল্ডিংয়ের পাশে সরকারি অর্থে নতুন করে তৈরি হয়েছে দুটি শ্রেণিকক্ষ। রান্নার জায়গা, স্টোর রুম। ভেঙে পড়ার ভয়ে পুরোনো শ্রেণিকক্ষে পঠনপাঠন হয় না। কষ্টে স্থান সঙ্কুলান করেই দুটি শ্রেণিকক্ষে চলছে পঠন পাঠন। ছাত্র সংখা ৭১ জন। বিশেষ অসুবিধে ছাড়া অধিকাংশই প্রতি দিন স্কুলে আসে। রয়েছে লাইব্রেরি/রিডিং কর্নার, সুলভ মূল্যের শিক্ষা কেনার ব্যবস্থা, নিয়মিত দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশ।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমিত কুমার রানা বলেন, ‘অনেক কিছু প্রয়োজন। এর মধ্যেও স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় স্কুলটিকে সুন্দর করে তোলার চেষ্টা করছি’। অভিভাবক থেকে বিদ্যালয় পরিদর্শক সকলেই কৃতিত্ব দিয়েছেন শিক্ষকদের। শিশুদের জন্য ‘আদর্শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষ্য তাঁদের। সেই লক্ষ্যকে সাধুবাদ সকলের।