বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে বা প্রবীন নাগরিকদের সম্বল বলতে শুধুই জমানো টাকায় ব্যঙ্কের সুদ। কিন্তু সেই সুদের হারেই এবার থাবা বসিয়েছে মোদী সরকার। এক মাসে দুবার। প্রবীন নাগরিকদের মাথায় হাত।
একদিকে চিকিৎসা খরচ দিন দিন বাড়ছে। তার ওপর আয় কমছে। সিনিয়ার সিটিজেনদের আয়ের একটা বড় উৎস এই সুদ। তাতেই কোপ বসানোয় চিন্তিত তাঁরা। প্রবীনদের আশঙ্কা, ‘একদিন হয়তো সুদটাই তুলে দেবে বিজেপি সরকার! উল্টে টাকা দিয়ে টাকা রাখতে হবে ব্যাঙ্কে! সুদ তো দূরের কথা, আসলটাও মিলবে কি না সন্দেহ’!
সিনিয়ার সিটিজেনদের এমন আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার সুপ্রিয় রায়। তাঁর কথায়, ‘এক দিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ইচ্ছেমতো টাকা তুলছে সরকার। অন্য দিকে সুদ কমাচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মারাত্মক জায়গায় পৌঁছে গেছে’। অর্থমন্ত্রীকে তোপ দেগে তিনি আরও বলেন, ‘জেএনইউয়ের ছাত্রী হলেও নির্মলা সীতারামন অর্থনীতির ‘অ–আ–ক–খ’টাই বোঝেন না। সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে। চাকরি নেই। বাড়ছে শুধুই দালালির ব্যবসা। আম্বানি–আদানিদের স্বার্থই দেখছে বিজেপি সরকার’।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক স্বপনকুমার সেনগুপ্তও এমনটাই মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘সুদের হার কমায় প্রবীণ নাগরিকদের সমস্যা হয়ে গেল। সিনিয়র সিটিজেনদের আয়ের একটা বড় উৎস এই সুদ। তবে যারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা রেখেছেন, তাঁদের সুদ কমবে না। তবে পরে টাকা জমা রাখতে গেলে কম সুদেই রাখতে হবে। এটা চিন্তার’।
ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ এই সরকারের আরও একটি নেতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন প্রবীন নাগরিকদের একাংশ। তাঁদের কথায়, চিটফান্ডের মতো ব্যাঙ্কগুলিকেও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ইচ্ছেমতো টাকা তুলছে। আর বড় বড় শিল্পপতিদের হাতে বেচে দিচ্ছে দেশটাকে। যুদ্ধ–যুদ্ধ জিগির তুলে দেশের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এত খারাপ পরিস্থিতি কখনও হয়নি। পেনশন তুলে দিতে চাইছে। বাড়িয়ে চলেছে সুদের ওপর কোপ। মানুষ বাঁচবে কী করে?
অর্থনীতিবিদদের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত, আধা–রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে সাময়িক টাকার জোগান অব্যাহত রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে মোদী সরকার। কিন্তু গচ্ছিত টাকার ওপর সুদ বাড়িয়েও পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব নয় বলেই তাঁদের মত।