কেন্দ্রীয় সরকার সদ্য হুঁশিয়ারি দিয়েছে শুধু আসাম নয়, গোটা দেশজুড়ে চালু করা হবে এনআরসি। আর সেই তালিকায় নাম রয়েছে বাংলারও। তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদে সরব রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। কিন্তু শাসকদলের প্রতিবাদকে পাত্তা দিচ্ছে না বিজেপি। এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উস্কানিমূলক মন্তব্যে সেটাই যেন আরও বেশি করে টের পাওয়া গেল। তাঁর কথায়, ‘দেশভাগ হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। তাহলে মুসলিমরা কেন এদেশে থাকবে?’
এদিন রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি। শুধু বাংলা নয় এখান থেকে গোটা দেশে ছড়াচ্ছে। জম্মু কাশ্মীরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পাওয়া গিয়েছে কোথা থেকে এল এঁরা। আকাশ থেকে তো নয়। এখানে এখনও ওদের ‘সেল্টার’ দেওয়া হয়। ট্রাকে ভরে ওদের ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পাচার করা হয়। বাংলাই ওদের করিডোর। এখান থেকে সবার আগে এনআরসি শুরু হওয়া উচিত।’
এরই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এনআরসির মাধ্যমে আমরা হিন্দুদের তাড়াতে চাই না। যে সমস্ত মুসলমান বাংলাদেশ থেকে এই দেশে ঢুকেছে তাদের প্রত্যেককে আমরা চিহ্নিত করব। কারণ দেশভাগ হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। তারপরও কেন এই দেশে ঢুকছে মুসলমানরা।’ তবে তিনি এটাও জানাতে ভোলেননি যে, ‘অন্যান্য দেশে অত্যাচারিত হিন্দুদের ঠাঁই দেওয়া হবে ভারতে।’ আর দিলীপের এহেন মন্তব্যে পরিষ্কার যে, তিনি ধর্মের ধোঁয়া দিয়েই মানুষের মনে সাম্প্রদায়িক বীজ পুঁতে দিতে চাইছেন।
এদিকে এনআরসির বিরোধিতায় সরব হয়ে ওঠা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একহাত নিতে ছাড়েননি দিলীপ ঘোষ। এদিন মমতার মন্তব্য ছিল, ‘২ কোটি কেন বাংলায় ২ জনের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক বিজেপি।’ তাঁর উত্তর দিতে গিয়ে এদিন দিলীপ ঘোষ মমতাকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘ওনাকে বেঁচে থেকে দেখে যেতে হবে, বাংলায় এনআরসি হবেই।’ এখন দেখার দিলীপের এই হুঁশিয়ারির পর কি পদক্ষেপ নেয় বাংলার ‘অগ্নিকন্যা’।