ট্রেন থেকে নেমে মাঝে মাঝেই যাত্রীরা চমকে উঠছেন। মনে হচ্ছে এটা কি পশ্চিমবঙ্গের কোনো স্টেশন না কি অন্য কোথাকার? কারণ আর কিছুই নয়। স্টেশনে শুধুই ইংরেজি ও হিন্দী ডিসপ্লে বোর্ডের ছড়াছড়ি। শুনতে আশ্চর্য হলেও এই চিত্র দেখা যায়। আসানসোল স্টেশনের চিত্রটা ঠিক এমনই এখন। বাংলা ভাষাকে এভাবে ব্রাত্য করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার বাসিন্দারা।
রেলের আসানসোল ডিভিশনের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষাকে ব্রাত্য করার অভিযোগ তুলে একটি সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখালেন কিছু বাসিন্দা। তাঁদের অভিযোগ, রেলের বিভিন্ন দফতরের যে সব বোর্ড বসানো হয়েছে সেগুলিতে বাংলায় লেখা হয়নি। তাঁদের একটি প্রতিনিধি দল ডিআরএমের কাছে এ বিষয়ে একটি স্মারকলিপিও দেয়।
‘বাংলা পক্ষ’ নামে ওই সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, সম্প্রতি আসানসোল স্টেশনের বিভিন্ন কার্যালয়ের নামের নতুন যে সব বোর্ড বসানো হয়েছে সেগুলি শুধু হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা হয়েছে। এটি বাংলা ভাষার অবমাননা বলে মনে করছেন তাঁরা। অবিলম্বে প্রত্যেকটি বোর্ডে বাংলায় লেখা ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের তরফে সুদীপ্ত রায়ের বক্তব্য, ‘‘অন্য কোনও ভাষার প্রতি আমাদের অনীহা নেই। কিন্তু এ রাজ্যে বাংলা ভাষার ব্রাত্য করার কোনও রকম চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।’’
ওই সংগঠনের সদস্যদের আরও অভিযোগ, রাজ্যের সীমানা এলাকার নানা স্টেশনে ট্রেন যাওয়া-আসার ঘোষণা বাংলায় করা হয় না। তাঁদের এই দাবিকে সমর্থন করেছেন আসানসোল পুরসভার তত্ত্বাবধানে থাকা সংস্থা ‘বাংলা অ্যাকডেমির’ সাধারণ সম্পাদক আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, ‘‘বাংলা ভাষার প্রতি এমন আচরণ ঠিক নয়। অন্য সব ভাষার পাশে বাংলাকেও অবশ্যই স্থান দিতে হবে।’’
বাংলা পক্ষের এই বিক্ষোভের আগে এই প্রসঙ্গে বিজেপির উদ্দেশ্যে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তৃণমূল বিধায়ক তথা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলা রাজ্যের প্রধান ভাষা। সেই ভাষাই যদি না রাখা হয়, তা অত্যন্ত অন্যায়। রেল অন্যায় করেছে। বিজেপি ভাষা এবং জাতি নিয়ে যে ভেদাভেদ করে এটা তারই ক্ষুদ্র সংস্করণ।