গতকাল ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিনে মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের আগামী ছবি ‘গুমনামী’র টিজার। যেখানে মূল চরিত্রে দেখা গেছে টলিউডের ‘দ্য ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। এছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। জানা গেছে, আগামী পুজোতেই আসতে চলেছে ‘গুমনামী’। কিন্ত ছবির টিজার মুক্তি পেতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ছবির মুক্তির আগেই রণংদেহি মেজাজে দেখা গেল নেতাজি গবেষকদের একাংশকে। সিনেমার টিজার মুক্তি পাওয়ার পরই পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে আইনি নোটিস পাঠালেন এক নেতাজি গবেষক। এমনকি ছবির মুক্তি আটকাতে প্রয়োজনে মামলারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেউ কেউ। যদিও বিষয়টিকে একেবারেই পাত্তা দিচ্ছেন না সৃজিত। তাঁর কথায়, “মুখার্জি কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে ছবি বানাচ্ছি। আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না।”
গতকাল এই সিনেমার টিজার মুক্তি পেতেই প্রশংসার ঝড় বয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রসেনজিৎ-সৃজিত জুটির ম্যাজিক বড়পর্দায় দেখার জন্য ফের অপেক্ষা করতে শুরু করে সিনেপ্রেমীরা। কিন্তু অন্যদিকে সিনেমা নিয়ে বিতর্কের ঝড়ও কম বয়নি। যেমন বেলগাছিয়ার বাসিন্দা নেতাজি গবেষক দেবব্রত রায়। তিনি নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং প্রযোজক সংস্থাকে এসভিএফ কে। দেবব্রতবার আইনজীবী প্রদীপ কুমার রায় বলেন, “আমার মক্কেলের তরফ থেকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। এর জবাব যদি না পাওয়া যায়, তা-হলে হাইকোর্টে মামলাও করা হতে পারে।”
আইনি নোটিসের বিষয়ে সৃজিতের মন্তব্য, “এখনও হাতে পাইনি। নোটিস দেখে উত্তর দেব। যার আদালতে যাওয়ার যাবেন। কারও স্বার্থে ঘা লাগলে আমার কিছু করার নেই।” কার স্বার্থে ঘা লেগেছে? এই প্রশ্নের জবাবে অবশ্য তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গুমনামী বাবাকে নিয়ে ছবি করার কথা ঘোষণার পরই আপত্তি জানিয়ে ছিলেন বসু পরিবারের একাংশ। সরব হন নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র বসুও। টিজার মুক্তির পর তিনি বলেন, “নেতাজির সঙ্গে গুমনামী বাবার যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা ভুল। যদি কোনও প্রমাণ থেকে থাকে, তা হলে প্রকাশ করার আবেদন জানাচ্ছি। কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই কেন নেতাজির সঙ্গে গুমনামী বাবাকে মিলিয়ে দেওয়া হল? তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা।” গুমনামী বাবা নিয়ে যখন পারদ চড়ছে, তখন কী বলছেন এই ছবির পরিচালক সৃজিত? তাঁর কথায়, “মুখার্জি কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে ছবি বানাচ্ছি। আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না। সরকারি নথিতে যা রয়েছে, তার বাইরে কিছু করছি না। সেখানে গুমনামী বাবা এবং নেতাজির বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।”
গুমনামী বাবাই কি নেতাজি? এ নিয়ে বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে নেতাজি গবেষকদের মধ্যে। কেউ মনে করেন গুমনামী বাবাই নেতাজি। আবার কারও মতে, গুমনামী বাবার সঙ্গে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কোনও সম্পর্কই নেই। এই বিতর্কের মাঝে গুমনামী বাবাকে নিয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে আইনি নোটিস দেওয়ার পরে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে।