সমস্ত জল্পনাকে সত্যি করেই সম্প্রতি বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়া হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের। বিলোপ ঘটেছে ৩৭০ ধারার। তবে মোদী সরকার যেভাবে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে তা নিয়ে বইছে দেশজোড়া সমালোচনার ঝড়। কিন্তু এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করলেন, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হওয়ার পরে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ শেষ হয়ে যাবে। যদিও শাহের এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন দেশের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। বাজপেয়ী জমানার ‘র’ প্রধান এ এস দুলাতের মতে, এর ফলে সন্ত্রাসবাদ আরও মাথাচাড়া দিতে পারে।
আজ চেন্নাইয়ে উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অমিত বলেন, ‘আমি মনে করি, ৩৭০-এ দেশ ও কাশ্মীরের কোনও উপকার হয়নি। একই ভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার মনে কোনও সংশয় নেই যে ৩৭০ বিলোপের পরে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ শেষ হয়ে যাবে এবং কাশ্মীর উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে।’ উপরাষ্ট্রপতিও বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করা সময়ের দাবি ছিল। দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তার খাতিরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে র-এর প্রাক্তন প্রধান দুলাত অবশ্য একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন, ‘প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম যেমন বলেছেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের রূপকারেরা একদিন অনুতাপ করবেন। আমিও তেমনই মনে করি। কাশ্মীরকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে, নিরাপত্তা-সন্ত্রাসের বিষয়টি জানার ফলে আমার আশঙ্কা, এতে সন্ত্রাসবাদ বাড়তে পারে। এখনই তা না হলেও আগামী দিনে হবে।’ দুলাত এ কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, ‘কাশ্মীরিরা চাপের মুখে মাথা নামিয়ে নেয়। কিন্তু পরে আবার মাথা তোলে। হাল ছাড়ে না। এটাই ইতিহাস।’
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মাথাব্যথা হল, কার্ফু ও নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনি তুলে নেওয়ার পরেই প্রতিবাদ-হিংসা-বিক্ষোভ শুরু হয়ে গেলে তা সামলানো। একই সঙ্গে পাকিস্তানও নিয়ন্ত্রণরেখায় গোলাগুলি ছোড়া ও অনুপ্রবেশে মদত দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানি মদতে পুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা ইতিমধ্যেই কাশ্মীর উপত্যকায় রয়েছে। এবং পাকিস্তানের দিক থেকে আরও বেশি অস্ত্র, গোলাগুলি পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও গোয়েন্দারা রিপোর্ট দিয়েছেন। ফলে শাহ যতই বলুন না কেন, ৩৭০ ধারা রদ হওয়ার পরে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ শেষ হয়ে যাবে, আদতে তা নয়।