পাল্টালো না ছবি। বদলালো না ময়দান। রয়ে গেল সেই একইভাবে। ২ ক্লাব যতই নিজেদের উন্নত করার চেষ্টা করুক, সমর্থকরা কিছুতেই যেন নিজেদের ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-ভাবনা উন্নত করতে পারছেন না। ছোটদের হোক কিংবা বড়দের, ইস্ট-মোহন ডার্বি মানে সমর্থকদের মধ্যে অশান্তি হবেই। আর তার খেসারত দিতে হয় ফুটবলকেই।
এর আগেও ছোটদের ডার্বিতে অশান্তি হয়েছে, এমনকি রক্তপাতও হয়েছে। মাথা ফাটিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে সমর্থকদের। তবুও যেন সেই ভুল শুধরে নেওয়ার শিক্ষা হয়নি। এদিন যেমনটা হলো অনূর্ধ্ব ১৯ জি বাংলা লিগের ফাইনালে। পেনাল্টি দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’বার উত্তপ্ত হলো দু’দলের গ্যালারি। যার ফলে মাঠে পড়ল ইঁট, জলের বোতল। শেষবার আর খেলা শুরু করা গেলই না। যার জেরে পুলিশি নিরাপত্তায় মাঠ ছাড়লেন রেফারি ও বিশেষ অতিথিরা। শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত করে দেওয়া হলো ফাইনাল ম্যাচ।
জি বাংলা লিগের প্রথম মরসুমের ফাইনালে এদিন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল দুই বড় দলের ছোট ছোট প্লেয়াররা। খেলার শুরুটা অবশ্য হয়েছিল অন্যভাবে। ঘরের মাঠে দাপট নিয়ে শুরু করেছিল লাল-হলুদের ছোটরাই। ডিফেন্সিভ হয়ে খেলছিল মোহনবাগান। বেশ কিছু সুযোগ তৈরি হলেও গোল হয়নি। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে বক্সের মধ্যে দীপ সাহাকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। ঠাণ্ডা মাথায় গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মনিচাঁদ সিং। এই পেনাল্টি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাগান সমর্থকদের ঝামেলার ফলে মাঝে মিনিট পাঁচেক বন্ধ থাকে খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে আক্রমণে ওঠে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। তার ফলও মেলে। ৪৭ মিনিটের মাথায় লং থ্রো থেকে বক্সের বাইরে হেড করেন এক প্লেয়ার। সেই বল থেকে সেকেন্ড হেডে গোল করে সমতা ফেরান কৌশিক সাঁতরা। ৫৫ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে বাগান ফুটবলার শুভ ঘোষের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে সংঘর্ষ হয় লাল-হলুদ গোলকিপার অয়নের। মাটিতে পড়ে যান বাগানের প্লেয়ার। যার ফলে রেফারি পেনাল্টি দেয় বাগানকে।
আর এই ঘটনার পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। রেফারির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন ফুটবলার ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। মাঠে হঠাৎই পড়তে থাকে ইঁট, জলের বোতল। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, প্রাক্তন লাল-হলুদ ফুটবলার সমরেশ চৌধুরীকে মাইক হাতে সমর্থকদের কাছে শান্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। যদিও তারপরেও বিক্ষোভ থামেনি। যার ফলে রেফারিরা মাঠ থেকে চলে যান। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামানো হয় র্যাফ।
এরপর আর কোনও ভাবেই খেলা শুরু করা যায়নি। কারণ যাই হোক, মরসুমের প্রথম ডার্বিই যেভাবে ভেস্তে গেল, তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বাংলার ফুটবলার ও সমর্থকদের মানসিকতাকে। যার ফলে ফের মুখ পুড়ল কলকাতা ময়দানের।