দোরগোড়ায় লোকসভা ভোট। নোটবন্দী, জিএসটি, আরবিআই, রাফাল-সহ একাধিক ইস্যুতে যখন ল্যাজেগোবরে কেন্দ্র, তখন
সুপ্রিম কোর্টে আবারও নতুন করে ধাক্কা খেল কেন্দ্র। সম্প্রতি দেশের যে কোনও কম্পিউটার ও মোবাইলের তথ্য ঘেঁটে দেখার জন্য দশটি তদন্ত সংস্থাকে অধিকার দিয়েছিল কেন্দ্র। এই বিষয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা ব্যাপারটি খতিয়ে দেখবে এবং ৬ সপ্তাহের মধ্যে যথাযথ কারণ দেখিয়ে জবাব দিতে হবে কেন্দ্রকে।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব রাজিব গৌবার সই করা একটি নির্দেশিকা কয়েকদিন আগে প্রকাশ্যে আসে। তাতে বলা হয়, দেশের দশটি তদন্তকারী সংস্থা যে কোনও কম্পিউটারের উপর নজরদারি চালাতে পারবে। সেই কেন্দ্রীয় নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। আদালতে আবেদন করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। তাঁর হয়ে মামলা লড়ছেন শ্রেয়া সিঙ্ঘল। শুধু তাই নয়, মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ হচ্ছে বলে এই নির্দেশিকা খারিজের দাবি করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এর আগে ফোনের ওপর নজরদারি চালাত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এই নির্দেশিকা জারির পর স্বাভাবিকভাবেই আইবি থেকে শুরু করে আরও কয়েকটি তদন্ত সংস্থার ক্ষমতা বাড়ানো হয়। তার মধ্যে ‘র’-এর মতো সংগঠনও রয়েছে। এই সমস্ত তদন্ত সংস্থা শুধু ফোন বা ইমেল নয়, এর বাইরে কম্পিউটারে আসা সমস্ত তথ্যই দেখতে পাবে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তদন্ত সংস্থাগুলির ক্ষমতা এমন ভাবেই বাড়িয়েছে যাতে প্রয়োজন পড়লে যে কোনও কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করতে পারবেন তদন্তকারীরা।
যদি কেউ নিজের কম্পিউটার দিতে না চায় বা তদন্তে অন্য কোনও ভাবে অসহযোগিতা করে তাহলে তার ৫ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে। মানে ল্যাপটপ, আইপ্যাড বা ফোনে সংগ্রহ করে রাখা যে কোনও তথ্যই ব্যবহার করতে পারবেন এই সমস্ত তদন্ত সংস্থার আধিকারিকরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এমন তুঘলকি নির্দেশিকার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘এটা যদি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য করা হয়ে থাকে তবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যথেষ্ট ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে এর জন্য কেন ফল ভোগ করতে হবে?’