মহাভারতের কৌরবেরা নাকি টেস্ট টিউব বেবি ছিলেন, কয়েক বছর আগের এই বিতর্কিত মন্তব্যে চারপাশে বেশ ঝড় উঠেছিল চারপাশে। বিজ্ঞানের এহেন উদ্ভাবনের ছাপ কিভাবে অত হাজার বছর আগেকার যুগ বহন করতে পারে তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে। এবার বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চে ফের উঠে এল সেই একই বিতর্ক। বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দাবি করে বললেন, হাজার বছর আগেও ভারতে স্টেম সেল রিসার্চ ও টেস্ট টিউব বেবির প্রযুক্তি ছিল। রামায়ণ ও মহাভারতের উদাহরণ দিয়েও তিনি জানালেন, গাইডেড মিসাইল প্রযুক্তিও নাকি নতুন কিছু নয়!
শুক্রবার সায়েন্স কংগ্রেসে বক্তৃতা রাখার সময় অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি নাগেশ্বর রাও বলেন, “স্টেম সেল রিসার্চ ও টেস্ট টিউব বেবি প্রযুক্তির জেরেই এক জন মা-এর থেকে একশো জন কৌরব পেয়েছিলাম আমরা। যা ঘটেছিল আজ থেকে হাজার বছর আগে। ওটা ছিল এই দেশের বিজ্ঞান। তিনি আরও জানিয়েছেন ‘মহাভারতে বলা আছে, ১০০টি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে মাটির পাত্রে রাখা হয়েছিল।’ এর পরই তাঁর প্রশ্ন, ‘এগুলি কি টেস্ট টিউব বেবি নয়? আসলে হাজার হাজার বছর আগেই এ দেশে স্টেম সেল রিসার্চ চলত।’ অবশ্য শুধুমাত্র টেস্ট টিউব বেবিতেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি নাগেশ্বর। রামচন্দ্রের ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র থেকে টেনে এনেছেন গাইডেড মিসাইলের তত্ত্ব। তাঁর মতে, আজকের গাইডেড মিসাইলের কার্যপদ্ধতি রামায়ণের যুগেও বর্তমান ছিল। তাঁর দাবি, রামচন্দ্রের ব্যবহৃত অস্ত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হেনে ফিরে আসত। এর পর নাগেশ্বর দাবি করেন, বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন আকার ও ক্ষমতার ২৪টি বিমান ছিল রাবণের। লঙ্কায় রাবণের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরও ছিল বলে বিজ্ঞান কংগ্রেসের আসরে দাবি করেছেন রাও!
এরকম বক্তব্যের পর ফের বিতর্কের ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এহেন অদ্ভুত ভাবনার চর্চা চলে বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চে। বছর কয়েক আগে এক বিখ্যাত বিজ্ঞানীকে এই অধিবেশনে আসার আমন্ত্রন জানানো হলে তিনি সরাসরি তা নাকচ করে জানিয়েছিলেন ‘আমি সার্কাস দেখতে যাব না’। ২০১৮ সালে বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদী সরকারের মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেছিলেন, বেদের তত্ত্বগুলি সম্ভবত আইনস্টাইনের বিখ্যাত ‘e=mc2’ সূত্রটির চেয়েও উন্নত। তবে অত্যন্ত হাস্যকর এই বক্তব্যকে ছাপিয়ে গিয়েছে গতকাল অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি নাগেশ্বর রাও-এর বক্তব্য।