নতুন বছর শুরু হওয়ার রেশ এখনও কাটেনি। এই উৎসবের আবহেই সাহিত্যমহলে নামল শোকের ছায়া। সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৮ বছরে প্রয়াত হলেন বিখ্যাত কবি পিনাকী ঠাকুর। চিকিৎসকদের প্রায় ১০০ ঘণ্টার লড়াইকে ব্যর্থ করে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি। আজ একই সঙ্গে চলে গেলেন আর এক বিশিষ্ট সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিতও। বাংলা সাহিত্যের দুই মহারথীর প্রয়াণ সৃষ্টি করল এক অপূরণীয় শুন্যতার।
২০১৮-র ২১ ডিসেম্বর থেকেই সেলিব্রাল ম্যালেরিয়ার মতো বিরল অসুখে ভুগছিলেন পিনাকী। প্রথমে কল্যানী জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে, পরে অবস্থার অবনতি হলে বারাকপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। পরে অবস্থা আরও গুরুতর হলে এসএসকেএমের ভর্তি করা হয়। আজ সকাল ৯ টা নাগাদ সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যে কবি পিনাকী ঠাকুরের অবদান অনস্বীকার্য। মূলত আশির দশক থেকে লেখালিখি শুরু করলেও নব্বইয়ের দশকে এসে জনপ্রিয়তা লাভ করেন কবি। ‘হ্যাঁ রে শাশ্বত’, ‘চুম্বনের ক্ষত’, ‘আমরা রইলাম’, অকালবসন্ত’, ‘কলঙ্করচনা’ ‘শরীরে কাচের টুকরো’-র মতো কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ লিখে ভূয়সী প্রশংসা কুড়োলেও তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একদিন অশরীরী’ প্রকাশের পর থেকেই পাঠকের নজরে চলে আসেন পিনাকী। এই কাব্যগ্রন্থের কারণে প্রশংসা আদায় করে নিয়েছিলেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, মণীন্দ্র গুপ্ত, শঙ্খ ঘোষের মতো কবির কাছ থেকেও।
আজই হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় কবির জন্মভিটেতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে পিনাকী ঠাকুরের। এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে রবীন্দ্রসদনে নিয়ে যাওয়া হবে কবির দেহ। শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে ঘণ্টাখানেক সেখানেই রাখা থাকবে তাঁর মরদেহ। তারপর সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাংলা অ্যাকাডেমিতে। সেখানে থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে হুগলির বাঁশবেড়িয়ায়। সেখানেই ত্রিবেণী ঘাট মহাশ্মাশানে সম্পন্ন হবে কবির শেষকৃত্য।