কিছুদিন আগেই জানা গেছিল পাঠ্য বিষয়ের পাশাপাশি এবার ছাত্রছাত্রীদের পাহাড় চড়ার প্রশিক্ষণ দেবে রাজ্য সরকার। এবার পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দিকে নজর দিতে ওজন নিয়ন্ত্রণের পাঠও দেওয়া হবে সরকারি উদ্যোগে।
বর্তমান সময়ে পিজ্জা, বার্গার কোল্ড ড্রিঙ্ক ইত্যাদিতেই মজে আধুনিক প্রজন্ম। আর এই সমস্ত খাবার প্রায়শই খাওয়ার ফলে স্থূলত্ব বা ওবেসিটির মত মারাত্মক রোগ থাবা বসাচ্ছে শরীরে। তার ফলে কম বয়সেই দিনভর ক্লান্তি, হৃদরোগ, কিডনির অসুখ ইত্যাদি বিভিন্ন জটিল রোগ বাসা বাঁধছে দেহে। এই সমস্যা ঠেকাতেই রাজ্য বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ওবেসিটি ঠেকানোর শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
স্কুলপাঠ্যে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হবে, মোটা হয়ে যাওয়া কোনভাবেই বংশগত নয় বরং অ-স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ওজন বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। শরীর চর্চার প্রতি অবহেলাও মেদ বৃদ্ধি করে। তাই ওজন বৃদ্ধি রুখতে শিক্ষকদের বলা হয়েছে তাঁরা যেন শিক্ষার্থীদের শরীর চর্চার ওপর গুরুত্ব দেন।
শুধু পড়ুয়াদের নয়, শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কয়েকটি ভাগে চিকিৎসকেরা শিক্ষকদের এই প্রশিক্ষণ দেবেন। রাজ্যের এক বিশিষ্ট জানিয়েছেন, ‘পড়ুয়াদের শেখানোর আগে শিক্ষকদের শেখা দরকার। স্কুলস্তরে ব্লাড সুগার বা ব্লাড প্রেশার মাপা শিখে পড়ুয়ারা প্রতিবেশীদেরও সাহায্য করতে পারবে।’
এই শিক্ষাকে শুধুমাত্র পুঁথিগত করে রাখতে চায় না রাজ্য সরকার। তাই ছাত্র-শিক্ষক-কর্মীদের ওজন বাড়ছে কিনা বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা তা জানতে প্রত্যেক স্কুলকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রও কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রাথমিক স্কুলগুলিকে ৩ হাজার, উচ্চপ্রাথমিক স্কুলগুলিকে ৭ হাজার মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলিকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে সরকারি উদ্যোগে।
উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ‘স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা’ বইতে বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকবে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘শিক্ষণ সামর্থ্য এবং মূল্যায়ন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ পুস্তিকা’ ইতিমধ্যেই পাঠিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। পড়ানোর সময় শিক্ষকদের ৫টি ‘ক’-এর ওপর বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে অর্থাৎ কাকে, কোথায়, কেন, কখন, কীভাবে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছে রাজ্য সরকার।