তাঁর ওপরেই ছিল সকলের মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্ব। কিন্তু তাঁর মুখেরই হাসি কেড়ে নিয়েছে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা ভোট। তিনি ভারতের ইতিহাসে নাম লেখানো প্রথম ‘হ্যাপিনেস মন্ত্রী’ লাল সিংহ আর্য। কিন্তু ভোটে হেরে এখন চরম বিষাদে তিনি। কারণ, কংগ্রেস কর্মীকে খুনের মামলা নিয়ে জেরবার হতে হচ্ছে তাঁকে। তার সঙ্গে যেতে চলেছে মন্ত্রীত্বও। নিন্দুকেরা বলছেন, মুখের হাসি হারিয়ে লাল সিং এখন হুঁকো মুখো হ্যাংলা।
কী এই হ্যাপিনেস মন্ত্রক? প্রত্যেকের মুখে হাসি ফোটাতে বিজেপি প্রথম হ্যাপিনেস মন্ত্রক গড়ে তোলে মধ্যপ্রদেশে। আর তার মন্ত্রী হন লাল সিংহ আর্য। ভুটানের গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস ইনডেক্সের ধারণার উপর ভিত্তি করেই এই মন্ত্রক গড়ে তুলেছিল বিজেপি। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতেও হ্যাপিনেস মন্ত্রী রয়েছেন।
কী কাজ হ্যাপিনেস মন্ত্রকের? বিপুল সংখ্যায় কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। এমনকি, ২০১৬ সালে ২৭ স্কুল পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনাও সামনে আসে। আর আত্মহত্যার অন্যতম কারণ মানসিক চাপ। সেই মানসিক চাপমুক্ত করাই ছিল এই মন্ত্রকের মূল লক্ষ্য। মধ্যপ্রদেশের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান ২০১৭ সালে এই মন্ত্রক গড়ে তুলেছিলেন। যোগ ব্যায়াম, মেডিটেশন, আধ্যাত্মিকতা গড়ে তোলা এবং
সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিনামূল্যে তীর্থযাত্রার ব্যবস্থা করার ছিল এই মন্ত্রকের উদ্দেশ্যে।
কিন্তু কংগ্রেস নেতার খুনের ঘটনায় লাল সিংকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই মামলা এখনও চলছে। তার মধ্যেই মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনের ফল তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছে। কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন লাল সিংহ। রাজ্যের মোট ২৩০ আসনের মধ্যে কংগ্রেস পায় ১১৪টি আসন। এসপি এবং বিএসপি-র সমর্থনে সরকার গড়তে চলেছে কংগ্রেস সরকার। ফলে রাজস্থানের গো-মন্ত্রী ওটারাম দেওসির মতোই মন্ত্রিত্ব খোয়ালেন ভারতের প্রথম এবং একমাত্র হ্যাপিনেস মন্ত্রী লাল সিংহ। আর মন্ত্রিত্ব হারিয়ে মুখের হাসি উধাও লালের।