ইভিএম কারচুপির প্রবল আশঙ্কা করেছিল প্রায় প্রতিটি বিরোধী দলই। তার পরেও নির্বাচন কমিশনের দাবি, এতে কারচুপি সম্ভব নয়। কিন্তু এরপরেও পাঁচ রাজ্যের ভোটেও ইভিএম নিয়ে উঠেছে নানা অভিযোগ। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের অস্বস্তি বাড়িয়ে ইভিএম-বিরোধিতায় আবারও একজোট হচ্ছে বিরোধীরা।
তেলেঙ্গানার ভোট এখনও পাঁচ দিন বাকি। কিন্তু রাহুল গান্ধীকে পাশে নিয়ে চন্দ্রবাবু নায়ডু আগাম সতর্ক করেছেন, কারচুপি হতে পারে। স্ট্রংরুমের সামনে মাটি কামড়ে পড়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন রাহুল। মধ্যপ্রদেশের ভোটের দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটযন্ত্রে কোনও প্রকার ত্রুটি হলে কমিশনকে তার দায় নিতে হবে। সরব অরবিন্দ কেজরীবালও। সামনের সপ্তাহে বিরোধী দলের বৈঠকেও এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল দিল্লিতে কমিশনের কাছেও যান নালিশ জানাতে। মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘হারের ভয়ে ভোটের পর ইভিএমে ব্যাপক কারচুপি করতে মরিয়া বিজেপি।’ অভিযোগ উঠেছে, ছত্তীসগঢ়ে এ বারের ভোটে কমিশনের হিসেবের পরেও রাজ্যের বিজেপি সরকার ইভিএমে পড়া ভোটের অঙ্ক আরও ৪৬ হাজার বাড়িয়ে দেখিয়েছে। তা-ও সেই সব আসনে, যেখানে গত ভোটে কংগ্রেস-বিজেপির ফারাক ছিল সামান্য। মধ্যপ্রদেশে তো ভোটের দিনই ৩ শতাংশ ইভিএমে গরমিল দেখা যায়।
তবে এখানেই শেষ নয়। ভোটের পর ইভিএম পাওয়া গেছে বিজেপি নেতার হোটেলের ঘরে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালে স্ট্রংরুমে ইভিএম মেশিন থাকলেও, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সিসি ক্যামেরা প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের বেশী বিকল হয়ে ছিল। কাজ করেনি এলইডি স্ক্রিনও। ফলে ‘লাইভ-ভিডিয়ো’ও বন্ধ থেকেছে। দু’দিন পরে নম্বর প্লেট ছাড়া স্কুলবাসে এসে পৌঁছেছে ইভিএম। এর আগে কর্নাটকের গ্রামে মিলেছিল ইভিএমের বাক্স। তাতে ছিল ঠাসা জামাকাপড়।
ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন সাফাই গেয়েছে, যে ইভিএম আসছে, সেগুলিতে ভোট নেওয়া হয়নি। আজ মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার জেলাশাসক প্রীতি মৈথিল নায়ক বলেন, স্ট্রংরুমের কাছে কেউ এলেই গুলি করা হবে। এই ভোটের জন্য তিনি নিজের ‘কেরিয়ার’-কে বাজি ধরতে পারেন না। কিন্তু এ কথাও ভরসাযোগ্য নয় বিরোধীদের কাছে। কারণ আপ-এর সৌরভ ভরদ্বাজ আগেই দেখিয়েছিলেন, ১৫-২০ মিনিট সময় হাতে পেলেই ইভিএম বদলে দেওয়া যায়।
গত বছর মধ্যপ্রদেশের ভিন্দেই কমিশন নতুন ‘ভিভিপ্যাট’-এর কাজ দেখাতে গিয়ে বিপাকে পড়ে। যন্ত্রে যে বোতামই টেপা হচ্ছিল, ভোট পড়ছিল পদ্মফুলে। ফলে গোঁড়াতেই যে গলদ রয়েছে সে কথা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করতে পারছে না নির্বাচন কমিশনও।