মতের অমিল হলেই ঘেরাও আর আন্দোলন। ‘ঘেরাও সংস্কৃতি’র চাপে ব্যাহত হচ্ছে কাজ। বিরক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির সঙ্গে দেখা করে এই কথাই জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের সময় উপাচার্যের সঙ্গে ছিলেন সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষও। সূত্রের খবর, পদত্যাগেরও ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন সুরঞ্জনবাবু। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যপাল দু’জনেই তাঁকে নিরস্ত করেন।
যাদবপুরে স্নাতকে নম্বরের ভিত্তিতে শুরু হতে চলা ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছেন কলা বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকরা। ইতিমধ্যেই ইংরেজি বিভাগের বেশিরভাগ অধ্যাপক ভর্তি প্রক্রিয়া বয়কট করেছেন। সেই পথেই হেঁটেছেন তুলনামূলক সাহিত্য এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপকেরাও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অর্থাৎ ‘জুটা’ কর্মবিরতির ডাক দেয়। প্রশাসনিক কাজকর্ম তো বটেই, ব্যাহত হয় পঠনপাঠনও।
ভর্তি পক্রিয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে বদল না হলে অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। যদিও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য তাঁদের অনুরোধ করেন, উপাচার্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলছেন। সেই বৈঠকের ফলাফল দেখে কর্মসূচি ঠিক করুক পড়ুয়ারা। রেজিস্ট্রার এই অনুরোধের পর অবশ্যে আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। একাংশ চাইতে থাকে, অবিলম্বে অনশন শুরু করা হোক। অন্যদল বলে, উপাচার্যের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠকের নির্যাস দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যা হচ্ছে, তা এগজিকিউটিভ কাউন্সিল এবং উপাচার্যের সিদ্ধান্ত। সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।“
একদিকে দ্বাদশে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে যাদবপুরে সরকারের ভর্তি সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে পড়ুয়াদের আন্দোলন। সব মিলিয়ে চাপে যাদবপুরের উপাচার্য। তাঁর মন্তব্যেই কার্যত পরিষ্কার, অনৈতিক ঘেরাও আন্দোলনের কারিগররাই ধ্বংশ করছেন ‘শিক্ষার উৎকর্ষ কেন্দ্র’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে।