ম্যাচ শেষ। মাঠের মাঝখানে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে মেসি। নিজেদের ডাগ আউটের সামনে আনন্দে আত্মহারা পোগবা, গ্রিজম্যানরা। মেসিদের বিদায় দিয়ে ডি’মারিয়াকে জড়িয়ে ধরলেন ম্যাচের নায়ক কিলিয়ান এমবাপে।
এই কাজান এরিনা কিছুদিন আগে দেখেছে গতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিদায়। শনিবার দেখল মেসিদের বিদায়। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে।
ম্যাচে দুই দলের মধ্যে তফাত গড়ে দিলেন ফ্রান্সের ১৯ বছরের এক তরুন তারকা কিলিয়ান এমবাপে। শুধু জয়সূচক নয়, জোড়া গোলও করলেন তিনি। শুরুতেই পেনাল্টি পাইয়ে দিলেন নিজের দেশ ফ্রান্সকে। হাইভোল্টজ ম্যাচে তাঁর জোড়া গোলের সৌজন্যে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স।
ম্যাচে ১৩ মিনিটে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। গ্রিজম্যানের পেনাল্টি থেকে। ১৭ মিটারের এক লম্বা দৌড়, গতি বাড়িয়ে আর্জেন্টিনা বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপে। গতিতে পিছনে পড়ে বক্সের মধ্যে এমবাপেকে ফাউল করেন রোহো। পেনাল্টি দেন রেফারি। সেই পেনাল্টি থেকে গোল গ্রিজম্যানের। তার আগে অবশ্য গ্রিজম্যানের ফ্রিকিক ক্রসপিস কাঁপিয়ে ফিরে আসে।
৪১ মিনিটে গোল শোধ ডি মারিয়ার। স্মরণীয় গোল। সেকেন্ডের ভগ্নাংশে এক পলকে দেখে নেওয়া। তারপর বাঁপায়ের বাঁক খাওয়ানো শট। হুগো লরিস হাত বাড়িয়ে, শূন্যে শরীর ছুঁড়ে দিয়েও তা আটকাতে ব্যর্থ হন। বল জড়িয়ে যায় জালের কোণে। ভিআইপি বক্সে বসে উচ্ছ্বাসে মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে ছুঁড়ে দিলেন মারাদোনা ।
মারাদোনার এই উচ্ছ্বাস অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ৬৪ মিনিটে ও ৬৮ মিনিটে আর্জেন্টিনার স্বপ্ন একাই শেষ করে দিলেন এমবাপে। মাটি ধরিয়ে দিলেন রোহো, ওটামেন্ডিদের। একটা গোল করলেন গড়ানো শটে। আরেকটা দুর্দান্ত প্লেসমেন্টে। তার আগে বিশ্বমানের গোল পাভার্ডের। বক্সের কোণা থেকে ডান পায়ের সাইড ভলিতে। বল জড়িয়ে যায় জালে। ম্যাচের একদম শেষ মুহুর্তে আর্জেন্টিনার হয়ে ব্যবধান কমান পরিবর্ত ফুটবলার অ্যাগুয়ারো।
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে কখনও এগিয়ে যায় ফ্রান্স। আবার কখনও এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তবে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসেন পল পোগবারাই। জোড়া হলুদ কার্ড দেখে পরের ম্যাচে নেই ফ্রান্সের মাতৌদি। তবে এবারের মত বিশ্বকাপ থেকে ছুটি মেসিদের। এই নিয়ে চারটে বিশ্বকাপ খেললেন মেসি। এবারেও হল না। পরের বার খেলবেন কিনা জানা নেই। নক আউটের গোল খরা এবারেও মিটল না তাঁর। বারে বারেই জড়িয়ে গেলেন ফ্রান্স ডিফেন্সের ফাঁদে। ট্র্যাজিক হিরো হয়েই বিশ্বকাপ ইতিহাসে রয়ে গেলেন মেসি।