২০২০-তে পুরসভা ভোট। আর তারপরই ২০২১-এ বিধানসভা ভোট। এই ভোট নিয়ে বিজেপি যখন হুঙ্কার দিচ্ছে বাংলা কেড়ে নেবে, সেই মুহূর্তে মাস্টারস্টোক খেলে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন উপনির্বাচন কেন্দ্রে জয় ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ আর খড়গপুর সদর জয়ে উচ্ছ্বসিত দলের নেতা কর্মীরা। মহারাষ্ট্রের মতো অবস্থা বিজেপির ঝাড়খণ্ডেও হতে চলেছে বলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষ বিজেপির ওপরে আস্থা হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। উপনির্বাচনে ৩-০ ফলাফলকে একদিকে ‘মানুষের আশীর্বাদ’ ও ‘বিজেপির ঔদ্ধত্যের ফল’ বলে ব্যাখা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু তাই নয়, এদিন সন্ধ্যায় তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দেন, ‘আমি নিজে যাব খড়গপুর ও কালিয়াগঞ্জের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে। আমি কথা দিয়ে কথা রাখি।’ অর্থাৎ উপনির্বাচন হলেও তিনি যে তা মোটেই ছোট করে দেখছেন না, তা যেন ক্রমেই স্পষ্ট করে দিচ্ছেন মমতা। পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরকে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল সুপ্রিমো আরও বলেন, ‘গোটা দেশে সর্বনাশী খেলা খেলছে বিজেপি। নাগরিকত্ব বিল নিয়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বিভেদের খেলা চালাচ্ছিল। তবে ওদের ঔদ্ধত্য, অহংকার বাংলায় চলবে না। বাংলার মানুষ বুদ্ধিমান। তারাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ এনআরসি ইস্যুতে বিজেপিকে একহাত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলি থেকে বাংলার মানুষকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা আমাদের কাছে সাহায্য চাইছেন। আমরা কিন্তু এ রাজ্যের মানুষের একমাত্র বন্ধু। আমাদের মানবিক সরকার।’
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয় বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যে রাজ্যে বড় ধাক্কা খাচ্ছে বিজেপি। গত কয়েক দিনে মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা থেকে বিদায়ের পাশাপাশি রাজস্থানে পুরসভা ভোটে বড় ধাক্কার মুখোমুখি হয়েছে পদ্ম শিবির। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের ৩ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি ধরাশায়ী হয়েছে। ঝাড়খণ্ডেও বিজেপির একই অবস্থা হতে চলেছে বলে মনে করেন তৃণমূলনেত্রী।
মমতা এই জয় নিয়ে জানিয়ে দিলেন, “কোনও বিজয়মিছিল হবে না। আমরা বিজেপির মতো নই।” খড়গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ তৃণমূলের হাতে কোনও দিনই ছিল না। দল তৈরি হওয়ার ২২ বছর হতে চললেও এই দুটি কেন্দ্র হাতছাড়া ছিল তৃণমূলের। সেই আনন্দ যে উদ্দীপনা তৈরি করতে পারে তা জানেন মমতা। তাই যে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তাঁর সাফ নির্দেশ, কোনও মিছিল করা যাবে না। কারণ তাঁর মতো পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ জানেন, আসল লড়াইটা একুশে।