দশ ফুট বাই দশ ফুট এক একটি ঘরেই ছ–সাত জনের গৃহস্থালি। ঘরের এক কোণেই রান্নার জায়গা। অন্য কোণে শৌচাগার। টালি, টিন বা পলিথিনে রোদ আটকালেও বৃষ্টি মানে না। স্যাঁতসেঁতে ঘর। এভাবেই কেটেছে বেশিরভাগ জীবন। কিন্তু এবার মমতার উদ্যোগে হাসি ফুটেছে একঘেয়ে কলোনিবাসীর জীবনে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে উদ্বাস্তু কলোনিগুলিতে জমির স্বত্ব দেবে রাজ্য।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা শোনার পর থেকেই উৎসবের মেজাজ বিধাননগর স্টেশন সংলগ্ন বাসন্তী কলোনি এবং যাদবপুর স্টেশন সংলগ্ন কামারপাড়া কলোনিতে। জমির মালিকানা না থাকায় সমস্যার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন উদ্বাস্তু কলোনির একাধিক মানুষ। তাঁরা বাড়ি তৈরির ঋণ পাচ্ছেন না। ব্যবসার ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও জমির দলিল না থাকলে যা যা সমস্যা হয়, তার সবেতেই জেরবার হতে হচ্ছে কলোনিবাসীদের। তাই মমতার এই উদ্যোগে কলোনিগুলিতে খুশির হাওয়া।
বছর ষাটের নমিতা হালদার বললেন, “চার–পাঁচ বছর বয়সে সুন্দরবন এলাকা থেকে এখানে এসেছিলাম। এখানেই বিয়ে হয়। সন্তান হয়। জীবনের বেশিরভাগটাই কাটতে চলল, কিন্তু মাথার ওপর ছাদ হল না। রেলের অনুমতি নেই। পরিবারের সদস্য বাড়লেও ঘর বাড়ানো যায়নি। এক ঘরে ঠাসাঠাসি করেই বসবাস করতে হয়। আমাদের স্বীকৃতি দেওয়া হলে রাজ্য সরকারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব”।
রাজ্য সরকারি জমিতে গড়ে ওঠা উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের জমির মালিকানা আগেও দিয়েছে রাজ্য। এবার কেন্দ্রীয় সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানার জমিতে গড়ে ওঠা উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের জমির ফ্রি হোল্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার পরিবার রয়েছে। অনেকের ছোট ছোট ব্যবসা রয়েছে। জমির স্বত্ব পেলে এইসব ব্যবসাও সরকারি স্বীকৃতি পাবে। নাগরিকত্ব পেতেও সুবিধে হবে। এই সমস্ত কলোনিতে যে–সব পরিবার রয়েছে, তাদের নিয়ম মেনে জমির স্বত্ব দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।