লোকসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই বাংলার বিভিন্ন এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভুগছে গেরুয়া শিবির। এমনকি খড়গপুরে বিধানসভা উপনির্বাচনের ২৪ ঘন্টা আগেই সেখানকার বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা কে নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন সেখানকার আরেক বিজেপি নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক। আর এবার বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার বিভিন্ন মণ্ডল কমিটি গঠন ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলো। এমনকি দলের প্রাক্তন ও বর্তমান দুই সভাপতির অনুগামীদের মধ্যে হাতাহাতি, মারপিট বাদ গেল না কিছুই। বিজেপির দুই শিবিরের মারপিটের জেরে ব্যারাকপুর রোডে সাময়িক যান চলাচলও স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলায় মোট ৩৮টি মণ্ডল কমিটি রয়েছে। গত জুলাই মাসে জেলা সভাপতি প্রদীপ ব্যানার্জির পরিবর্তে দায়িত্ব পান শঙ্কর চ্যাটার্জি। তারপর পুরনো মণ্ডল কমিটির ১৮ জন সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বারাসত হেলা বটতলার কাছে একটি অনুষ্ঠানগৃহে দলের তরফ থেকে নতুন মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণার বৈঠক ছিল। সেখানে শঙ্কর ও প্রদীপ দুই শিবিরের সমর্থকরাই হাজির ছিলেন। ভেতরে যখন নতুন মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণার বৈঠক চলছে, বাইরে তখন দুই শিবিরের সমর্থকদের হাতাহাতি, মারপিট বেধে যায়। বেলা দুটো নাগাদ নতুন সভাপতিরা যখন একে একে বের হতে থাকেন, বাইরে ‘মানছি না, মানব না’ স্লোগান দিতে থাকে বিজেপিরই বিক্ষুব্ধ শিবির।
প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রদীপের অনুগামী রাজকুমার পাল বলেন, ‘আমি দলের গঠনতন্ত্র মেনে নির্বাচিত মণ্ডল সভাপতি ছিলাম। নতুন জেলা সভাপতি শঙ্কর চ্যাটার্জি টাকার বিনিময়ে আর একজনকে মণ্ডল সভাপতি পদে বসিয়েছেন। আমরা এই অনৈতিক কাজ মানব না।’ অন্যদিকে, নতুন জেলা সভাপতি শঙ্কর-অনুগামী বারাসত পশ্চিম মণ্ডল সভাপতি জয় ব্যানার্জি বলেন, দলের গঠনতন্ত্র মেনেই আজ মণ্ডল সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। যারা বাইরে গণ্ডগোল করেছে, তারা দলের কেউ নয়।’ তবে বিজেপিরই কেউ কেউ স্বীকার করে নিয়েছেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে বিভিন্ন জায়গায় আলগা হয়েছে সংগঠন। বারাসতের ঘটনা তারই প্রমাণ।