উপনির্বাচনের আগে দলীয় প্রার্থীর হয়ে ভোটপ্রচারে রাজ্যে এসেছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন এই সুযোগেই এনআরসি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু’চার কথা শুনিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি যে বরাবরই ‘বেলাগাম’। তাই মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালো তো হলই না। উল্টে এমন বেফাঁস কিছু কথা বলে গেলেন তিনি, যাতে অস্বস্তি বাড়ল খোদ তাঁর দলেরই। ‘ত্রিপুরায় এনআরসি হলে আমার আর মুখ্যমন্ত্রী থাকা হবে না!’ হ্যাঁ, এবার এমনই মন্তব্য করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব।
প্রসঙ্গত, রায়গঞ্জে সাংবাদিক বৈঠকে বসে বিপ্লব বলেন, ত্রিপুরায় এনআরসি নৈহ নৈব চ। হলে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারাতে হবে। কারণ তাঁর বাবা, ঠাকুরদা বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। এই প্রথম নয়। দিন কয়েক আগেও তিনি প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে, ত্রিপুরার মানুষ চাইছেন না। তাই এনআরসি হবে না। আসল কারণটা এবার নিজেই ফাঁস করলেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘আমার বাবা, আত্মীয়স্বজন বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। এখানে এসে নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র তৈরি হয় তাঁর। তার পর আমি জন্মাই। তাই ত্রিপুরায় যদি এনআরসি লাগু হয় তাহলে সবথেকে বেশি ক্ষতি আমার হবে। আমার মুখ্যমন্ত্রী পদ চলে যাবে। আমি কি বোকা যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারানোর জন্য এনআরসি চালু করব?’ এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করে এবার ফের খবরের শিরোনামে বিপ্লব। সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
কেউ সেখানে তাঁকে নাগরিকত্ব বিলের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন যেখানে হিন্দু স্বরণার্থীরা দেশে নাগরিকত্ব পাবেন। আবার কেউ তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির কালো দিক তুলে ধরছেন। অনেক বিজেপি কর্মী, সমর্থক তাঁকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এলে তাঁর সমস্যা হবে না। অনেকে আবার ধিক্কার জানিয়েছেন। স্বার্থপর বলেছেন। তবে সবমিলিয়ে ‘বিপ্লব-বাণী’তে যে ফের একবার বিজেপির মুখ পুড়েছে তা বলাই বাহুল্য।