কেন্দ্রের ক্ষমতায় মোদী সরকার আসার পর দেশের কর্মসংস্থানের মান এমনিতেই নিম্নমুখী। ক্রমশই বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা। এহেন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলল কেন্দ্রের এক ঘোষণা। জানা গেছে, এবার থেকে আর কোনও চাকরিই স্থায়ী হবে না। শীতকালীন অধিবেশনে এমনই শ্রম বিধি পাশ করাতে চলছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বৈঠকে ‘লেবার কোড অন ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রিলেশনস ২০১৯’ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জানা গিয়েছে, নতুন শ্রম বিধিতে চুক্তিভিত্তিক চাকরির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সংস্থাগুলি যাতে যেকোনও সময়সীমার জন্য চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করতে পারে তার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা পাকাপাকি ভাবে তুলে দেওয়ার পথে হাঁটবে।
এই বিধি বিলের প্রধান বিষয় হলো, স্থায়ী মেয়াদী চাকরি চুক্তির মাধ্যমে নিয়োগের আইনি ব্যবস্থা সারা দেশে চালু করা। স্থায়ী মেয়াদি বলতে সেই মেয়াদ মাত্র ৩মাস থেকে ৬মাস হবে। এই মেয়াদে চুক্তিতে নিয়োগ হবে দেশের সর্বত্র। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় অস্থায়ী নিয়োগ যা হয় তা ঠিকাদারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এবারের বিধিতে ঠিকাদার ব্যবস্থা বিলোপ করা হচ্ছে। যে কোনও সংস্থা সরাসরি নির্দিষ্ট মেয়াদের চুক্তিতে নিয়োগ করবে।
এই ইঙ্গিত ঘিরে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন অনেকেই৷ এই নয় বিধি যদি কার্যকর করা হয়, তাহলে দেশে কর্মসংস্থানের সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে৷ কারণ স্থায়ী চাকরির জন্য বহু পরিশ্রম করেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ সে বেসরকারি ক্ষেত্রে হোক কিংবা সরকারি৷ এবার যদি সরকারি চাকরিতে স্থায়ী ব্যবস্থা উঠে যায়, তাহলে অর্থনৈতিকভাবে চূড়ান্ত সঙ্কটে পড়তে পারে দেশের জনতা৷ তবে এই বিল আদৌ পাস হয় কি না, সেদিকেই তাকিয়ে দেশের কয়েক কোটি চাকরিপ্রার্থী৷
কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রায় সব শ্রমিক সংগঠনই। এর ফলে দেশের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে তারা৷ এর ফলে সরকারি চাকরিতে যদি স্থায়িত্ব না থাকে তাহলে দেশে চূড়ান্ত অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। তাই এই বিধি সংসদে পাশ হলে তারা দেশব্যাপী আন্দোলনের রাস্তায় হাঁটবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।