যোগী রাজ্যে মানুষের তুলনায় অধিক প্রাধান্য পায় গরুরা একথা সর্বজনবিদিত। মানুষের জন্যে নয়, বরং গরুদের জন্যেই নেওয়া হয় একাধিক পদক্ষেপ। কিছুদিন আগেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে দেখা গিয়েছিল, মিড ডে মিল প্রকল্পের আওতায় মিরজাপুরের প্রাথমিকের ছাত্রদের কেবল নুন আর রুটি খেতে দেওয়া হয়েছে। আর সেই ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যোগী সরকারের নিন্দায় সরব হয়েছিল গোটা দেশের মানুষ। এরপরই সামনে এল সরকারের আরও এক কীর্তি, যেখানে রাজ্যের গরুদের শীতের হাত থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য পাটের শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
গোমাতাদের কোটে চট ছাড়াও থাকবে কাপড়। আর বাছুরদের জন্য একেবারে তিন-স্তরের কাপড় দেওয়া স্পেশাল কোট। অযোধ্যা নগর নিগমের কমিশনার নীরজ শুক্ল জানাচ্ছেন, দর্জিদের তাঁরা বলেছেন, বাছুরদের কোটের একেবারে ভেতরে যেন নরম কাপড় দেওয়া হয়। হোক না গরু, মানুষ তো! তাই ছেলেদের আর মেয়েদের কোটের ডিজাইনের তফাৎ আছে। কমিশনার বলছেন, ‘‘কোটগুলো গরুর গায়ে আলগা না-রেখে সেলাই করে দেওয়ার কথা ভাবছি, কারণ তা না-হলে খুলে পড়ে যাবে।’’
বিশ্ব খাদ্য সূচক ২০১৯ এর তথ্যানুযায়ী, ভারতেই সবথেকে বেশি মানুষ অনাহারে দিন কাটান। সমীক্ষায় উঠে এসেছিল ১১৭ টি দেশের মধ্যে ১০২ নম্বর স্থানে রয়েছে ভারত। অথচ এসব দিকে সরকার দৃষ্টিপাত না করে নজর দিচ্ছে গরুদের দিকে! জানা গেছে শুধু কোটই নয়, জাঁকিয়ে শীত পড়লে আরও ব্যবস্থা আছে। গোশালায় আগুন জ্বালানো হবে। মাটিতে পাতা থাকবে খড়ের গদি। গো-পরিবারের কারও যদি আগুন পোহাতে বা মাটিতে গড়িয়ে নিতে ইচ্ছে হয়, তার বন্দোবস্ত। মেয়র হৃষীকেশ উপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য গরুদের পরিচর্যা। গোশালাগুলোকে রাজ্যের সেরা করে তুলব আমরা।’’ রাজনৈতিক বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, গরুর কোট কেনা ভাল কথা। তবে শীতকালে খোলা রাস্তায় রাত কাটাতে বাধ্য হওয়া হতদরিদ্র পরিবারগুলোর কথা ভাবলেও ভাল করতেন যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের এই কর্তারা।