সোমবার দুপুরে সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মন্ডল। যিনি কিনা শাসক দলের উদ্দেশ্যে মঞ্চ থেকে হুঙ্কার করেন। কাজে গাফিলতির অভিযোগে নিজের দলের অঞ্চল সভাপতিকে পদ থেকে সরিয়েছেন। সেই মানুষটাকেই সম্মেলন শেষে অন্য রূপে দেখলেন তারই দলের মানুষ। কাশ্মীর থেকে শাল বিক্রি করতে এই স্টেডিয়ামের বাইরে এসেছিলেন তিন কাশ্মীরি। সেই শাল বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিজে পছন্দ করে শাল কিনলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি। দলের কর্মীদেরও বললেন কিনতে। অনুব্রতের কথায়, ‘‘কাশ্মীরে কোনও মানুষ যাচ্ছেন না। ওঁরা এখানে এসে ব্যবসা করছেন, তো করুন না!’’
কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা বিপন্ন! কাজ হারিয়ে সুদূর কাশ্মীর থেকে তাই বাংলায় আসছেন অনেক বিক্রেতাই। বীরভূমে এসে তারা তৃণমূলের সভা–সমিতিতে ঘুরে ঘুরে শাল ও গরম পোশাক বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন। সৌজন্যে বীরভূম জেলা তৃণমূল। ওরা ৩ বন্ধু। নাসির লোন, রামিজ আহমেদ ও তারেক লোন। প্রত্যেকের বয়স ২৫ বছরের আশেপাশে। বাড়ি কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে। অমরনাথ যাত্রার সময় পহেলগাঁও বেস ক্যাম্পে ঘুরে ঘুরে তীর্থযাত্রীদের কাছে কাশ্মীরের শাল ও গরম পোশাক বিক্রি করেন। কিন্তু এবার গল্পটা অন্য, কাশ্মীরে নেই পর্যটক। ধারাবাহিক অশান্তির জেরে ভূস্বর্গের পর্যটন শিল্প এবার মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই সঙ্কটে পড়েছেন এই শাল ব্যবসায়ীরা।
অনুব্রতের নির্দেশে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব ঘোষণা করেন, ‘‘বাইরে কয়েক জন কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা বসেছেন। যদি পছন্দ হয় কিনবেন।’’ তবে কেনার কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল না। মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করা হয়, ‘‘এটা কোনও দলীয় নির্দেশ নয়। যাঁর পছন্দ হবে, দামে পোষাবে, তাঁরাই নেবেন।’’ এদিন কিছু শাল বিক্রি হয়ে যাওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও। কাশ্মীরের পহেলগাঁও থেকে আসা রামিজ আহমেদ, তারেক লোন ও নাসির লোন বলেন, ‘‘আমাদের এক সপ্তাহে যা বিক্রি হয়, তা এক দিনেই হয়ে গেল। কেষ্টদাকে ধন্যবাদ।’’