অবশেষে কাটতে চলেছে মহারাষ্ট্রের মহাজট। আর তার ফলেই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়ের পর এবার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হাতছাড়া হতে চলেছে গেরুয়া শিবিরের। আজ দুপুর তিনটের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যে সরকার গঠনের দাবি জানাবে কংগ্রেস, এনসিপি এবং শিবসেনার নয়া জোট। যদি সব ঠিক চলে তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ পাবে শিবসেনা। কংগ্রেস এবং শরদ পাওয়ারের দল একটি করে উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ পেতে পারে। অন্তত এমনটাই শোনা যাচ্ছে। তবে শিবসেনার পক্ষ থেকে উদ্ধব ঠাকরেই মুখ্যমন্ত্রী হবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। উদ্ধব অন্য কোনও বিশ্বস্ত নেতাকে ওই পদে বসাবেন না কি নিজেই বসবেন সেটা জানায়নি শিবসেনা।
যদিও মহারাষ্ট্র বিজেপি দাবি করেছে, তাদের পক্ষে এখন ১১৯জন বিধায়কের সমর্থন আছে। আরও কথা বার্তা চলছে। তারাই আগামী দিনে সরকার গড়বে। তবে সরকার গড়ার দৌড়ে এই মুহূর্তে এগিয়ে রয়েছে শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের নয়া জোটই। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস, এনসিপি এবং শিবসেনার বৈঠকে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচী নিয়ে ঐক্যমত এসেছে। প্রধানত কৃষি সমস্যাকে ওই কর্মসূচীর ভরকেন্দ্র রাখা হয়েছে। শিবসেনা ৫৬, এনসিপি ৫৪ এবং কংগ্রেস ৪৪টি আসন পেয়েছে। এই আসন প্রাপ্তির সংখ্যার নিরিখেই মন্ত্রক বন্টন করা হবে। অর্থাৎ শিবসেনা পাবে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বেশি মন্ত্রক। তার পর পাবে এনসিপি এবং কংগ্রেস পাবে সব থেকে কম মন্ত্রক। এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার বলেছেন, অনেকেই মনে করছে এই জোট সরকার টিকবে না। কিন্তু এই সরকার গঠন করা হচ্ছে কয়েকদিনের মধ্যেই এবং এই সরকার ৫ বছর চলবে। কোনও অন্তর্বর্তী নির্বাচনের প্রশ্নই নেই।
উল্লেখ্য, এক বছরের মধ্যেই বিজেপির দখলে থাকা তিনটি রাজ্য হাতছাড়া হয়েছে। হরিয়ানায় ক্ষমতা ধরে রাখা সম্ভব হলেও সে রাজ্যে এতদিন ছিল বিজেপির একক সরকার। কিন্তু এখন দুষ্মন্ত চৌতালার দলের উপর নির্ভরশীল বিজেপির সরকার। এবার আরও একটি বড়সড় রাজ্যেও বিজেপি ক্ষমতাচ্যুত হল। এই বার্তা আসন্ন ঝাড়খণ্ডের ভোটে খারাপ প্রভাব ফেলবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এমনতিতেই হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের ভোটের ফলপ্রকাশের পর এখন বিজেপিও ঝাড়খণ্ড নিয়ে অতি আত্মবিশ্বাসী নয়। কারণ হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্র নিয়ে যতটা নিশ্চিত ছিল বিজেপি, ফলাফল সেই প্রত্যাশাকে এতটাই ধাক্কা দিয়েছে যে ঝাড়খণ্ড নিয়ে এখন বিজেপি নেতৃত্ব অত্যন্ত সতর্ক। সবমিলিয়ে ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বই এবং হিন্দুত্ব রাজনীতির অন্যতম আঁতুরঘর মহারাষ্ট্রের মতো তাৎপর্যপূর্ণ একটি রাজ্যে সরকার গড়তে না পারা যে বিজেপির কাছে বিরাট বড় ধাক্কা, তা বলাই বাহুল্য।