অক্লান্ত ভাবে মানুষের বিপদে আপদে মানুষের পাশে থাকেন তিনি। পরিশ্রমকে ভয় পান না। এমনকী মানুষের স্বার্থে তিনি যে কোনও লড়াইয়ে নামতে পারেন। কারণ মানুষের দুঃখ–কষ্টে তাঁর হৃদয় কাঁদে। শনিবার রাত ১০টায় মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা গিয়েছে নবান্নের কন্ট্রোলরুম দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করতে। এখন বুলবুল অনেকটাই সরে গিয়েছে। প্রভাব থাকলেও পরিস্থিতি স্থিতিশীলের দিকে। এইবার সেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করে সোমবার নামখানা এবং বকখালি পরিদর্শনে যাবেন তিনি। ক্ষয়ক্ষতির খোঁজখবর নিতে প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানান তিনি।
রবিবার সকালে মমতা পর পর দুটি টুইট করেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে জানান, বুলবুলের তাণ্ডবের জেরে তিনি তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর পিছোলেন। টুইটে তিনি বলেন, সোমবার নামখানা এবং বকখালির ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে যাবেন। দ্বিতীয় টুইটে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, নামখানা ও বকখালির পরিদর্শন করে কাকদ্বীপে পূনর্বাসন ও ত্রাণ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। এরপর ১৩ তারিখ উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে বুলবুলের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখবেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, আগামী ১২ নভেম্বর কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরা পৌঁছনোর কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ওইদিন শিলিগুড়িতে একটি গুরুদ্বারে যাওয়ার কথা ছিল। ১৩ তারিখ শিলিগুড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা ছিল কোচবিহারে। সেদিন বিকেলে রাসমেলার অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন তিনি। বানেশ্বর মন্দিরেও পুজো দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল মুখ্যমন্ত্রী। ১৪ তারিখ কোচবিহারে একটি দলীয় কর্মসূচিতেও হাজির থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সবই বর্তমান পরিস্থিতিতে পিছিয়ে দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সাগরদ্বীপের উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার। স্থলভাগে ঢোকার পরে তার বেগ বেড়ে হয়েছে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। বুলবুলের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাকদ্বীপ, নামখানার বিস্তীর্ণ এলাকা। এই ঘূর্ণিঝড় আবারও উসকে দিয়েছে আয়লার স্মৃতি। ভেঙে গিয়েছে একাধিক কাঁচাবাড়ি। ঘরছাড়া হয়েছেন অনেকেই। হাতানিয়া-দোয়ানিয়া ফেরিঘাটও ভেঙে গিয়েছে। যার ফলে বিপর্যস্ত জনজীবন। এছাড়াও বসিরহাটের অবস্থাও প্রায় একইরকম। বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জে ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রাণও গিয়েছে বেশ কয়েকজনের। এই এলাকাগুলিরই খোঁজখবর নিতেই ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।