বিশ্বজোড়া মন্দা এবং সোনার চড়া দামের জাঁতাকলে পড়ে ম্লান পূর্ব বর্ধমান জেলার ধনতেরাসের বাজার। পূর্ব বর্ধমানের স্বর্ণ শিল্পী এবং ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশের মত এমনটাই। তাঁদের দাবি, দৈনন্দিন খরচ সামলে সাধারণ মানুষের হাতে সোনা কেনার মতো উদ্বৃত্ত টাকা নেই। আর চাহিদা না থাকায় বাজারও নিম্নগামী।
প্রসঙ্গত, ধনতেরসে সোনার জিনিস কেনা শুভ বলে মনে করেন একটা বড় অংশের মানুষ। ফলে পূর্ব বর্ধমান জেলার সদর বর্ধমান-সহ কাটোয়া, কালনা, মেমারি শহর গোটা জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে যে ৫ হাজার সোনার দোকান রয়েছে, লক্ষ্মীপুজো থেকে ধনতেরাস পর্যন্ত তার প্রতিটিতেই উপচে পড়ে মানুষের ভিড়। কিন্তু এ বছর সোনার দর এতটাই আকাশছোঁয়া যে, দৈনন্দিন খরচ সামলে ইচ্ছে থাকলেও সোনা কিনতে পারিনি মানুষ।
জেলার স্বর্ণ ব্যবসায়ী গদাধর দত্ত, নন্দকুমার পালরা বলছেন, ‘গত বছরে ধনতেরাসের রাতে ১০ কেজি সোনার গয়না বিক্রি হয়েছিল। প্রতি বছরই ধনতেরাসে ২৫ শতাংশ বিক্রি বাড়ে। এবার বাড়া তো দূরের কথা, গত বারের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম সোনা বিক্রি হয়েছে। দেশজোড়া অর্থনীতির ঝিমুনি, প্রাকৃতিক বিপর্যয় আর তার জেরে সোনার মন্দা বাজার, এই তিন ফলায় বিদ্ধ ধনতেরাসের বাজার।’ বিসি রোডের এক দোকানের ম্যানেজারের কথায়, ‘২৫ বছর ধরে সোনার দোকান সামলাচ্ছি। এত বাজে অবস্থা আগে দেখিনি।’
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রবীণ শিক্ষক অরূপকুমার চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছে। টালমাটাল অবস্থা। সোনা কেনার চাহিদা নেই সাধারণ মানুষের মধ্যে।’ আর
বর্ধমান সদর স্বর্ণশিল্পী ওয়েলফেয়ার সমিতির সম্পাদক স্বরূপ কোনার তো স্পষ্ট বলছেন, ‘নোটবন্দীর চেয়েও বাজে অবস্থা চলছে। নোটবন্দীর বছরেও সোনা কেনার যে চাহিদা ছিল, এবার সেটাও নেই। গত বছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’