কেটে গিয়েছে ৫ দিন। তবে বিধানসভার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে এখনও তুঙ্গে শিবসেনা-বিজেপি কাজিয়া। এতদিন ধরে একা শিবসেনাই বিজেপিকে নিশানা করে আসছিল। ফিফটি-ফিফটি ফর্মুলা মেনে তাদের দাবি ছিল, আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকুক তাদের দল থেকে উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্য ঠাকরে। কিন্তু দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে বিজেপির নেতা নির্বাচনের একদিন আগে এবার বিজেপির পাল্টা গর্জন শোনা গেল। খোদ দেবেন্দ্রই জানিয়ে দিলেন, ৫ বছরের জন্য তিনিই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। পদ ভাগাভাগির কথা তিনি জানেন না। জানেন অমিত শাহ আর উদ্ধব ঠাকরে।
প্রসঙ্গত, শাহের মুম্বই যাওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। পুরনো প্রতিশ্রুতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় উদ্ধবও বিজেপি-শিবসেনার ঘরোয়া বৈঠক বাতিল করেছেন। স্নায়ু যুদ্ধের মধ্যেই চাপ বাড়াতে শিবসেনায় ভাঙনের খবর নিয়ে প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় কাকড়ে বলেন, ‘শিবসেনার ৪৫ জন বিধায়ক ফড়নবীশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরা জোট সরকার চান।’ তাঁর দাবি, শিবসেনার জয়ী ৫৬ জন বিধায়কের মধ্যে ৪৫ জনই বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন। অর্থাৎ, প্রয়োজনে বিজেপি এঁদের ভাঙিয়ে নিতে পারে।
শিবসেনা আবার গত ফেব্রুয়ারি মাসের যৌথ সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিও ছড়াচ্ছে। লোকসভা ভোটের আগে এক মঞ্চে ছিলেন অমিত শাহ, উদ্ধব ঠাকরে ও দেবেন্দ্র। সেখানে দেবেন্দ্র স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, লোকসভার পর বিধানসভায় বিজেপি-শিবসেনা জিতে এলে দুই দলের মধ্যে পদ ও দায়িত্বের সমান ভাগ হবে। উদ্ধবও সেই সুরে কথা বলছেন। তবে এখন দেবেন্দ্র বলছেন, ‘লোকসভার আগে মুখ্যমন্ত্রী পদ ভাগের প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমার সামনে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আর আমাদের দলের সভাপতি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে শিবসেনার সঙ্গে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কী কথা হয়েছে, তা শাহ ও উদ্ধব ঠাকরেই বলতে পারবেন।’
দেবেন্দ্র এ কথা বলেছেন অমিতের সঙ্গে পরমর্শ করে। বিজেপি জানাচ্ছে, অমিত আপাতত মুম্বইয়ে যাচ্ছেন না। তাদের মতে, শিবসেনাকেই এখন পিছিয়ে আসতে হবে কিংবা দর কষাকষি করে ঝুঁকি নিতে হবে। অথবা বিজেপিকে ছেড়ে অন্য কিছু ভাবতে হবে। এ প্রসঙ্গে শিবসেনার সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘উদ্ধব ঠাকরের কাছে বিকল্প রয়েছে। কংগ্রেস ও শরদ পাওয়ার বিজেপির সঙ্গে যাবে না। কিন্তু আমরা জোটধর্ম রাখতে পাপ করতে চাই না। তবে মনে রাখতে হবে, শিবসেনায় কোনও দুষ্মন্ত চৌটালা নেই, যাঁর বাবা জেলে।’ রাউতের কটাক্ষ, ‘পুরো ভিডিও সামনে আসার পরেও ফড়নবীশ যদি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী পদ ভাগ নিয়ে কথা হয়নি, তা হলে সত্যের সংজ্ঞা বদলাতে হবে।’