দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মাসখানেক আগেই আসামে প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। যার ফলে ‘নিজভূমে পরবাসী’ হতে হয়েছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনকে। এই ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের মধ্যে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষই হিন্দু হওয়ায় ইতিমধ্যেই জোর প্রতিবাদ শুরু করেছে খোদ আসামের বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরাই। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক। এবার সেই বিতর্কই আরও খানিকটা বাড়ল এনআরসির খরচের বহর দেখে। আসামে এনআরসি প্রক্রিয়ায় খরচ হয়েছে ১৬০০ কোটি টাকা! এত টাকা কীভাবে খরচ হল সেটা খতিয়ে দেখতে দাবি উঠেছে সিবিআই তদন্তের।
প্রসঙ্গত, আসামে এনআরসি নিয়ে প্রথম সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আসাম পাবলিক ওয়ার্কস (এপিডব্লু)। সংস্থার সভাপতি অভিজিৎ শর্মার অভিযোগ, এনআরসির নামে ১৬০০ কোটি টাকা খরচ করেছে কেন্দ্র। এই পুরো টাকাটাই জনগণের। এত টাকা কীভাবে খরচ হল সেটা জানতে সিবিআই তদন্তই একমাত্র পথ বলে মনে করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, এনআরসির নামে ব্যাপক আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। তালিকা থেকে বহু বৈধ ভারতীয়ের নাম বাদ গিয়েছে। আবার বহু বাংলাদেশির নাম নথিভুক্ত হয়েছে। তাই তিনি সরকারি অর্থের প্রকৃত হিসাব পেতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেন।
আর বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার অভিযোগ, এনআরসি-ছুটরা অন্য রাজ্যে গেলে নানা ধরনের সমস্যায় পড়ছেন। রাজ্যের ভিতরেও তাঁরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তাই বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে অনুরোধ করেছেন তিনি। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তরুণ গগৈ আবার সাফ জানিয়েছেন, বিজেপি সরকারের সৌজন্যে এনআরসি প্রক্রিয়াটাই ছেলেখেলার পর্যায়ে পৌঁছেছে। বৈধ নাগরিকদের বাদ দিয়ে, অবৈধদের জন্য নাগরিকত্ব প্রমাণের সুযোগ করে দিয়ে গোটা প্রক্রিয়াটাই অর্থহীন হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন তিনি।