মাস কয়েক আগেই উত্তর মহারাষ্ট্রের বাগলান তালুকে ৪৪ বছর বয়সি চাষি তাতিয়াভাউ খেরনার তাঁর পেঁয়াজ ক্ষেতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁর আত্মীয়েরা দাবি করেছিলেন, ৫০০ কুইন্টাল পেঁয়াজ মজুত রেখেও বিক্রি করতে না পারায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। আবার ওই একই সময়ই আত্মঘাতী হওয়া ৩৩ বছর বয়সি মনোজ ধনদাগের মৃত্যুর পিছনেও ছিল একই কারণ। মনোজও নিজের ক্ষেতে বসেই বিষ খান। পরে মৃত্যু হয় তাঁর। মোদী সরকারের গত ৫ বছরের সালতামামি ঘাটলে দেখা যাবে এমনই অনেক কৃষকমৃত্যু বা আত্মহত্যার ঘটনার ছবি। মোদীর দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রবল সংকটের মধ্যে দাঁড়িয়ে মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। গত জুলাই মাসে বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে ২১৯ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। অর্থাৎ, ওই মাসে রাজ্যে প্রতিদিন গড়ে ৭ জন করে কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সরকারি পরিসংখ্যানেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের কৃষকদের স্বস্তি দিতে দু’বছর আগে কৃষিঋণ মকুবের কথা ঘোষণা করে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। সারা দেশের মধ্যে এই রাজ্যেই সবথেকে বেশি কৃষকদের মকুব করা হয়েছে বলে সে সময় ঢাক ঢোল পিটিয়ে দাবি করেছিল দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সরকার। কিন্তু তার পরেও যে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, তা সরকারি পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যে কমপক্ষে ৮০০ কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে এর আগের রিপোর্টে জানিয়েছিল রাজ্যের কৃষি পুনর্বাসন দফতর। এর ৩ মাসের মাথায় রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এল। সরকারি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাসে মহারাষ্ট্রে ১,৫৪২ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, যা গোটা ২০১৮ সালের থেকে বেশি। ২০১৮ সালে এখানে ১,৪৮৭টি কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছিল। মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই বিধানসভা ভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে। সে সময় কৃষক আত্মহত্যার এই পরিসংখ্যান রাজ্যের শাসক দলকে যে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। মুখ পুড়েছে কেন্দ্রেরও।