এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে সবকটি ম্যাচ জিতেছে ভারত। অপরাজিত তকমা ধরে রাখার লক্ষ্যে আজ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত। পাঁচ ম্যাচে কোহলি বাহিনীর সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট। এই ম্যাচ জিতলে ‘টিম ইন্ডিয়া’ সেমি-ফাইনালে ওঠার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। ছয় ম্যাচে মাত্র তিন পয়েন্ট পাওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। যদিও ইংল্যান্ড পর পর দু’টি ম্যাচ হেরে যাওয়ায় ক্যারিবিয়ানদের ঘুরে দাঁড়ানোর একটা সুযোগ এসে গিয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিকতার বড় অভাব চোখে পড়ছে। তবুও মনে রাখতে হবে, ক্রিস গেইল ম্যাচ উইনার। শাই হোপের সঙ্গে তিনি ওপেন করবেন। নিকোলাস পুরান, শিমরন হেটমায়ার তিনে ও চারে নামতে পারেন। মিডল অর্ডারে ক্যারিবিয়ানদের বড় ভরসা জ্যাসন হোল্ডার ও কার্লোস ব্রেথওয়েট। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারানোর তেমন কিছু নেই। মরিয়া হয়ে তারা মাঠে নামবে। হোল্ডার, ব্রেথওয়েটরা যদি কোহলিদের বিজয়রথ আটকে দেন, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি আজ উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে চান না। তবে শচীন তেন্ডুলকর বলেছেন, ক্রিস গেইলকে থামাতে এই ম্যাচে তিনি মহম্মদ সামিকে বসিয়ে ভুবনেশ্বর কুমারকে খেলাতেন। কোহলি সেই পথে হাঁটেন কি না, সেটাই দেখার। তবে সামি গত ম্যাচে হ্যাটট্রিক সহ চারটি উইকেট নিয়ে দলকে জিতিয়েছিলেন। তাই এই ম্যাচেও যশপ্রীত বুমরাহর সঙ্গে তিনিই হয়তো খেলবেন। অতিরিক্ত পেসারের দায়িত্ব সামলাবেন হার্দিক পান্ডিয়া ও বিজয় শঙ্কর। পায়ে চোট থাকায় গত ম্যাচে বিজয় বল করেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্স আশা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ভারতীয় দলে একটি পরিবর্তন হতেও পারে। খেলতে পারেন রবীন্দ্র জাদেজা। লোয়ার অর্ডার ব্যাটিংকে শক্তিশালী করতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কোহলি। সেক্ষেত্রে অবশ্য দুই রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের মধ্যে একজনকে বাদ দিতে হবে।
ভারতের হয়ে এই ম্যাচেও রহিত শর্মার সঙ্গে লোকেশ রাহুলই ওপেন করবেন। তিন নম্বরে ব্যাট করবেন বিরাট কোহলি। যিনি এখনও সেঞ্চুরির খোঁজে রয়েছেন। চারে হয়তো বিজয় শঙ্করের উপরই ভরসা রাখবে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে বিশ্বকাপের আগে থেকেই চার নম্বর নিয়ে সমস্যা ছিল। লোকেশ রাহুল তা অনেকটাই ভরাট করে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু শিখর ধাওয়ান চোট পেয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। ওপেনার হিসাবে লোকেশ দারুণভাবে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। তাতে শিখরের অভাব তেমন পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু চার নম্বরের সমস্যা নতুন করে মাথা চাড়া দিয়েছে।
বিজয় শঙ্করকে নিয়ে যতটা ঢাক পেটানো হয়েছিল, বাস্তবে তার সুফল পাচ্ছে না দল। সেই সঙ্গে মহেন্দ্র সিং ধোনির অফ ফর্ম কোহলিকে আরও চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। আফগানিস্তান ম্যাচে মাহি ৫২ বলে মাত্র ২৮ রান করেছিলেন। তাঁর এমন মন্থর ব্যাটিংয়ের সমালোচনা করতে ছাড়েননি কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকরও। তাসত্ত্বেও টিম ম্যানেজমেন্ট ধোনির উপর আস্থা রাখবেন। কারণ, তিনি দলে থাকলে অনেক সুবিধা আছে। শুধু ব্যাটসম্যান হিসাবে নয়, উইকেটকিপিংয়ের পাশাপাশি কঠিন সময়ে কোহলিকে সদুপদেশ দেন মাহি। আফগানিস্তান ম্যাচেও শেষ ওভারে সামি কিন্তু ধোনির টিপস পেয়েই হ্যাটট্রিক করেছিলেন। ধোনির অফ ফর্ম যদি সাময়িক হয়, তাহলে চিন্তার কোনও কারণ নেই। তবে ম্যাচের পর ম্যাচ ধোনি বড় রান না পেলে মিডল অর্ডারে চাপ বাড়বে।