দ্বিতীয়বারের জন্য সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লীর মসনদে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘ আলোচনার পর তৈরি হয়েছে মন্ত্রীসভা। তবে আগেরবারের থেকে এইবার মন্ত্রীসভায় হয়েছে অনেক রদবদল। কারণ এবার বাদ গিয়েছে অনেক উল্লেখযোগ্য মুখ। যেমন মন্ত্রীসভায় দেখা যাবে না সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, সুরেশ প্রভুর মতো আরও এক ঝাঁক মুখ। শুধু বিজেপির অন্দরের নেতারাই নয়, বঞ্চিত তাঁদের শরিক দলগুলিও। যার ফলে ক্ষোভও উগড়ে দিচ্ছে তারা। যেমন দল থেকে মাত্র একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়ায় শেষ মুহূর্তে শপথ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। এবার আরও কড়া অবস্থান নিল সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ)। ভবিষ্যতে আর কখনও এনডিএ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় শামিল হবে না বলে জানিয়ে দিল তারা।
দলের হয়ে রবিবার এই ঘোষণা করেছেন জেডিইউ-এর সাধারণ সম্পাদক তথা প্রধান মুখপাত্র কে সি ত্যাগী। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় শুধুমাত্র একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। জেডিইউ-এর পক্ষে যা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তাই ভেবেচিন্তে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ভবিষ্যতে আর কখনও এনডিএ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় অংশ নেব না। এটাই আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’ দল থেকে মাত্র একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী করার প্রস্তাব যে তাঁর মনঃপুত হয়নি, তা আগেই খোলাখুলি জানিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। ৩০ মে দলীয় সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘জেডিইউ থেকে মাত্র একজনকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় এই নামমাত্র উপস্থিতি আমাদের চাই না বলে ওদের জানিয়ে দিয়েছি।’
ওই দিন সন্ধ্যায় রাইসিনা হিলে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণে হাজির হলেও, তার একদিন পর ফের সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন নীতীশ। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় নামমাত্র উপস্থিতির চেয়ে বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন করব আমরা। তা ছাড়া একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। জেডিইউ-এর সমর্থন নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রয়োজনই নেই ওদের।’ উল্লেখ্য, মোদী সরকারের প্রথম দফাতেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অংশ ছিল না জেডিইউ। ২০১৭-য় রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও কংগ্রেসের জোট থেকে বেরিয়ে এসে বিহারে বিজেপির হাত ধরে তারা। বিজেপির সুশীলকুমার মোদী বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী হন। এ বছর লোকসভা নির্বাচনে ১৬টি আসনে জয়লাভ করে জেডিইউ। ১৭ আসনে বিজয়ী হয় বিজেপি। তার পরই মন্ত্রীত্ব নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়।
অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে নাম তুলে নেওয়ার পর রবিবার বিহার মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ ঘটান নীতীশ কুমার। লোকসভা নির্বাচনে বেশ কয়েকজন বিধায়ক সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায়, শূন্যস্থান পূরণ করতে এ দিন ৮ জন নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করেন তিনি। কিন্তু এই নয়া ৮ মন্ত্রীর সকলেই সংযুক্ত জনতা দলের নেতা। শরিক দল বিজেপির কাওকেই সেখানে জায়গা দেননি ক্ষুব্ধ নীতীশ।