ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেকারত্ব হ্রাসে নজর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাত ধরেই লক্ষাধিক কর্মসংস্থান হয়েছে। এবারে মমতার উদ্যোগে সরকারি আর্থিক সহায়তায় বেকারদের স্বনির্ভরের লক্ষ্যে গঙ্গারামপুরে কর্মতীর্থ চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। লোকসভা ভোট পর্ব মিটলেই গঙ্গারামপুর ব্লকের দামোদরপুর এলাকায় চালু হবে কর্মতীর্থ মার্কেট কমপ্লেক্স।
এই গ্রামীণ এলাকায় এতদিন সরকারি উদ্যোগে কোনও বাজার না থাকায় ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারছিলেন না এলাকার বেকার যুবকরা। অভিযোগ, ব্যবসা বাণিজ্য করার উপযুক্ত জায়গার অভাবে ব্লকের বেকারদের একটি বড় অংশ কাজের জন্য বাইরে চলে যাচ্ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে এখানকার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সংখ্যালঘু উন্নয়নদপ্তরের আর্থিক সহযোগিতায় প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে দোতলা কর্মতীর্থমার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে কর্মতীর্থ মার্কেট চালু হলে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থান হবে সেই সঙ্গে এই সীমান্ত এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নও হবে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের বর্ডার এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তর তাদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে এই কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে এনেছে। লোকসভা ভোট পর্ব মিটলেই চালু হবে এই কর্মতীর্থ মার্কেট কমপ্লেক্স। এলাকার মানুষের আশা, এই বাজার চালু হওয়ার পর আর কাজের জন্য এলাকার কাউকে বাইরে যেতে হবে না।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের ভাইস চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্র বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা সফরে গঙ্গারামপুর শহরে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি বাসুরিয়া বর্ডার এলাকায় একটি কর্মতীর্থ করার কথা ঘোষণা করেন। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জায়গা নির্বাচন করে দিই। সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের আর্থিক সহায়তায় এই প্রকল্প গড়ে উঠেছে। লোকসভা ভোট পর্ব মিটলেই আমরা কর্মতীর্থ মার্কেট কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন করব। বেকার যুবকদের কথা চিন্তা করেই এই মার্কেটটি তৈরি করা হয়েছে। মার্কেটটি চালু হলে গ্রামের সাধারণ মানুষকে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার করতে আর বাইরে যেতে হবে না। সেই সঙ্গে চাঙ্গা হবে গ্রামের অর্থনীতি।
গঙ্গারামপুরের বিডিও বিশ্বজিৎ ঢ্যাং বলেন, গঙ্গারামপুর ব্লকের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দামোদরপুর এলাকায় কর্মতীর্থ মার্কেট ভবন তৈরি হচ্ছে, এর কাজ প্রায় শেষ। জেলা পূর্ত দপ্তর কর্মতীর্থ ভবনটি রূপায়ণের কাজ করছে। রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের আর্থিক সহায়তায় তিন কোটি টাকা বরাদ্দে এই কাজ হচ্ছে। এখানে মোট ৪০টি ঘর হয়েছে। ভবনটি হস্তান্তর হয়ে গেলে আমরা কর্মতীর্থ ভবনটি খুলে দেব। ভবনের ঘরগুলি সঠিকভাবে ব্যবসায়ীদের দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া শুরু করব। সরকারি নিয়ম অনুসারে ৪০টি ঘড় উপভোক্তাদের দেওয়া হবে। মার্কেটটি খুললে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটবে।
এই মার্কেট কমপ্লেক্সের কাজ প্রায় শেষ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে হস্তান্তর করা হলেই দোকান ঘরের জন্য আবেদন নেওয়া শুরু হবে। জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গারামপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে বাসুরিয়া এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সরকারি উদ্যোগে কর্মতীর্থ মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো কর্মতীর্থ মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ে ওঠায় খুশি এলাকার যুবকরা।