সারা দেশে যখন লোকসভা নির্বাচনের পারদ সপ্ত সুরে ঠিক তখনই বাংলায় এক অন্যরকম চিত্র। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সব বাধাকে উপেক্ষা করে ভোট দিতে পৌঁছে যান এক বঙ্গনারী। প্রসব যন্ত্রণায় কাতর ফিরোজা ভোট দেন বুথে গিয়ে। তারপর তাঁকে ছুটতে হল হাসপাতালে। তাঁর কোল আলো করে এল এক ফুটফুটে কন্যা৷ আনন্দে আপ্লুত বাবা, মা নাম রাখলেন – মমতা৷ এভাবেই লোকসভা ভোটের চতুর্থ দফার দিনটি স্মরণীয় হয়ে রইল বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বালুজুরি গ্রামে৷
ভোটের দিন কন্যা সন্তান পেয়ে তৃণমূল কর্মী বাবা সারিফুদ্দিন প্রিয় নেত্রীর নামেই তার নাম রাখেন – মমতা৷ সারিফুদ্দিন জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুবই শ্রদ্ধা করেন। ভোট দেওয়ার পরই তাঁদের কাছে এসেছে মেয়ে৷ তাই খুশি হয়েই নেত্রীর নামে মেয়ের নামকরণ করেছেন৷ আরও একটি নাম রাখা হয়েছে খুদের৷ তাঁদের কেন্দ্র বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল প্রার্থী ডাক্তার মমতাজ সংঘমিতার নামে মেয়ের আরেক নাম হয়েছে – মমতাজ৷
মনের জোরেই ফিরোজা আজ সকালে পৌঁছে যান মন্তেশ্বরের বালিজুরি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭২ নম্বর বুথে। নিজের ভোট নিজে দিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এই সাহসী বঙ্গনারীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয় হাজারো গ্রামবাসী। উদ্বিগ্নের মধ্যেই আসে সুখবর। কন্যা সন্তান হয়েছে শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় অপেক্ষারত মানুষ।
ফিরোজার স্বামী সারিফুদ্দিন পেশায় কৃষক। তবে রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, তাই তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়েছেন৷ সারিফুদ্দিন বলেন, ‘মেয়ে ও মা সুস্থ রয়েছে দেখে নিশ্চিন্ত হয়েছি। মেয়ে হওয়ায় খুবই ভাল লাগছে। ঠিক করেই রেখেছি, মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেই ওর নাম রাখব মমতা বা মমতাজ। যাতে আমাদের প্রার্থীর নামের সঙ্গেও মিল আছে।’ ওই শিশুর মা হাসপাতালে শুয়েই মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ভোট দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। সেই জন্যই কষ্ট করেই ভোট দিতে যাচ্ছিলাম। তাই এই দিনটা কোনওদিন ভুলব না।’ গ্রামবাসীরা বলছেন, গণতন্ত্রের প্রতীক হিসাবেই ওই শিশুর জন্মদিন সকলের কাছেই চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। নতুন মমতাকে নিয়ে এখন আনন্দে মেতেছেন সকলে৷ মমতার মত শক্তিরও আভাস পাচ্ছেন অনেকে।