গতকাল ছুটির দিন হলেও তৃণমূল প্রার্থীরা গোটাদিন জুড়ে ব্যস্ত থাকলেন প্রচারে, কর্মী সভায়। আরও বেশি করে পৌঁছে গেলেন মানুষের কাছে। কেউ করলেন সভা, কেউ পরিচিত হলেন এলাকার সঙ্গে, কেউ রিকশা চেপে এলাকায় ঘুরলেন, কেউ মেটালেন নিজস্বী তোলার আবদার। কাল রবিবারের চিত্রটা ছিল এমনই।
গতকাল থেকেই পুরোদমে প্রচারে নেমে পড়লেন যাদবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। রবিবার তিনি বারুইপুরের রবীন্দ্রভবনে এক কর্মিসভায় যোগ দেন। ভোট চাওয়া নয়, নিজেকে ‘মেয়ের মতো’ বলে দাবি করে এলাকাবাসীর ‘আশীর্বাদ আবদার’ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। বিপক্ষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও আক্রমণ নয়, বরং শ্রদ্ধা-ই জানালেন রাজনীতির আঙিনায় নবাগতা মিমি। বললেন, ‘আমার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন বিকাশদা। উনি কলকাতার মেয়র ছিলেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে। তাঁকেও প্রণাম জানাই। সুযোগ পেলে ওনার সঙ্গে দেখা করব, কথা বলব।’ পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘গরম কোনও সমস্যাই নয়। শুটিং তো আর মরশুম মেনে হয় না। গরমে কাজ করার যথেষ্ট অভ্যেস আছে”। বারুইপুরের মল্লিকপুরে তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত একটি রক্তদান–শিবিরেও যোগ দেন মিমি। রক্তদান–শিবিরে সেখানে তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কাউকে-ই নিরাশ করেননি মিমি। হাসিমুখে মেটালেন আবদার। নিজেও তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেলফি তোলেন। বিকেলে বারুইপুরে প্রচারে নামেন মিমি। কিন্তু অত্যধিক ভিড়ের কারণে মিছিল বাতিল করে দিতে হয়।
হাওড়ায় ফুটবল, ক্যারম খেলে প্রচার করলেন বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়। প্রসূন বলেন, ‘সবাইকে হারিয়ে ভোটে জিততে চাই। মাঠে খেলে, লড়ে জিততাম। ভোটের ময়দানেও তাই করব।’ তৃণমূল ৪২–এ ৪২ আসন পাক, এই ভাবনা থেকে মধ্য হাওড়ার একটি মাঠে যজ্ঞ করা হল। যজ্ঞস্থলে ছিল রাজ্যের ৪২ আসনের তৃণমূল প্রার্থীর ছবি।
আসানসোলে সকাল সকাল প্রচারে নেমে পড়লেন অভিনেত্রী মুনমুন সেন। এর আগে তিনি বাঁকুড়া থেকে সাংসদ হয়েছেন। সেই অর্থে আসানসোলে তিনি নতুন প্রার্থী। প্রচার শুরুর আগে তিনি কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেন। তারপর রিকশায় চেপে, এলাকা ঘুরে শুরু করেন প্রচার। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। বেশ কিছুটা সময় তিনি জিপে চেপেও প্রচার করেন। বাঁকুড়ায় এদিন প্রচার করেন রাজ্যের মন্ত্রী, ওই কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত মুখার্জি। সিউড়ির রবীন্দ্রসদনে তৃণমূল জেলা কমিটির বর্ধিত সভায় যোগ দেন বীরভূম কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ এবং ওই কেন্দ্রেরই তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। দলকর্মীদের উদ্দেশে তিনি ভাষণও দেন।
দক্ষিণ কলকাতায় এলাকায় ঘুরে প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়। রাতে তিনি কর্মিসভা করেন লেক টাউনে। কৃষ্ণনগরে ছোট ছোট কর্মিসভা, এলাকায় হেঁটে প্রচার করেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। রানাঘাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রুপালি বিশ্বাস রবিবাসরীয় সকালে চাকদার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে লোকের সঙ্গে কথা বলেন, প্রচার করেন। জনসংযোগের জন্য এদিন বাজারকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।