আই লিগ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব ক্লাব সুপার কাপের প্রস্তুতি নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছিল। ২৩ মার্চ থেকে সুপার কাপের প্র্যাকটিস শুরু হবে জেনে দেশে ছুটি কাটাতে গিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রো। সাময়িক ছুটি দেওয়া হয়েছে বাগান ফুটবলারদেরও। এই আবহেই আই লিগের ৭টি ক্লাব জোট বেঁধে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে জানাল, দাবি না মানলে তারা সুপার কাপ বয়কট করবে। সুপার কাপ নিয়ে অনড়ই রইল ক্লাব জোট।
কতগুলো দল শেষ পর্যন্ত খেলবে, তা নিয়ে উঠে গেল প্রশ্ন। পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে ফেডারেশন বনাম ক্লাব জোটের লড়াই আদালতেও গড়াতে পারে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দিল্লির দুই নামী আইনজীবীর সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা বলে রেখেছেন ক্লাব কর্তারা। কলকাতার দুই প্রধান-সহ দেশের সাতটি ক্লাব ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে বুধবার জানিয়ে দিয়েছে, তারা ভুবনেশ্বরের টুর্নামেন্টে খেলবে না। এ দিন সব ক্লাব আলাদা ভাবে তাদের বক্তব্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমকে। ক্লাবগুলির ক্ষোভ, আই লিগ এবং আইএসএল সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন তুলে তারা যে চিঠি দিয়েছিল, তাকে গুরুত্ব দেয়নি ফেডারেশন। যে ক্লাবগুলি চিঠি দিয়েছে তারা হল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, চেন্নাই সিটিএফসি, নেরোকা, আইজল এফসি, মিনার্ভা পঞ্জাব ও গোকুলম।
১৮ ফেব্রুয়ারি ক্লাব জোট চিঠি দিয়েছিল ফেডারেশনকে। তাতে দাবি ছিল মূলত ১) পরের মরসুমে আই লিগের ভবিষ্যৎ কী? লিগের স্পনসর হবে কে? টাকা কোথা থেকে আসবে? ২) আইএসএল না আই লিগ, কোনটা দেশের এক নম্বর লিগ জানাতে হবে। ৩) প্রাথমিক স্তরের ফুটবলে উন্নতির জন্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছে ফেডারেশন? এই চিঠি দেওয়ার পর ২৩ দিন পেরিয়ে গেলেও ফেডারেশন এর জবাব না দেওয়ায় ক্লাবগুলো ক্ষোভে ফুঁসছে। দিল্লি থেকে ফেডারেশন সচিব কুশল দাস বললেন, ‘‘ওদের চিঠির উত্তর তো তিন বছর আগেই আমরা দিয়েছি। আইএসএল প্রধান লিগ হবে। আই লিগ হবে লিগ ওয়ান। আই লিগের ক্লাবগুলো চেয়েছিল সুপার কাপ করতে। ওরা চেয়েছিল বলেই আমরা সুপার কাপ করেছি। এখন ওরা না খেললে আর কি করা যাবে!’’
মোহন বাগানের অন্যতম শীর্ষকর্তা সৃঞ্জয় বসু জানান, ‘ফেডারেশনের বেশ কিছু ব্যাপারে আমরা অসন্তুষ্ট। আই লিগ এবং আইএসএলের ভবিষ্যৎ এখনও স্পষ্ট নয়। তাছাড়া আইএসএলে প্রোমোশন এবং রেলিগেশন নিয়েও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি এআইএফএফ। বিড পেপার কবে ছাড়বে তা’ও অজানা। আমরা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বেশ কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনার জন্য ফেডারেশন সভাপতিকে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তার উত্তর দেওয়া তো দূর অস্ত্, প্রাপ্তিস্বীকারও করা হল না। তাই সুপার কাপ না খেলার ভাবনা রয়েছে।’
এই আবহেই অন্য সুর শোনা যাচ্ছে ইস্টবেঙ্গলের গলায়। ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের সচিব কল্যাণ মজমুদার জানিয়েছেন, ‘সদস্য-সমর্থকদের কথা ভেবে এবং ক্লাবের ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তাঁরা সুপার কাপে খেলতে চান। কোয়েস ইস্ট বেঙ্গলের চেয়ারম্যান অজিত আইজ্যাকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।’ কল্যাণবাবুর বক্তব্য, ‘গত আট-নয় মাস ধরে বোর্ড মিটিং হয়নি। এই সমস্যা নিয়ে দ্রুত সেই সভা ডেকে কোয়েস কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান তাঁরা।’