‘বাম’ হয়ে প্রকাশ্যেই ‘রাম’নাম করে ফেলায় উঠেছিল বিতর্কের ঝড়। তাই বেকায়দায় পড়ে তড়িঘড়ি সেন্ট্রাল কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে। হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের প্রশংসা করে এবার দলের সেন্ট্রাল কমিটি থেকে বরখাস্ত হলেন সিপিএম নেতা নরসাইয়া আদম।
জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে তাঁর ‘একান্ত’ অনুরোধে সোলাপুর জেলায় একটি আবাসন প্রকল্পের দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের ভূয়সী প্রশংসা করেন সিপিএমের মহারাষ্ট্রের সম্পাদক নরসাইয়া আদম। এই সোলাপুর কেন্দ্র থেকেই বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
শুধু তাই নয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের জন্য নরেন্দ্র মোদীকেই চান বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অর্থাৎ কোনও রাখঢাক না রেখেই বন্ধু ‘রাম’-এর তারিফ করে ফেলেছিলেন ওই বাম নেতা। ভোটের আগে এর ফলে দলের বিড়ম্বনা আরও বাড়তে পারে বুঝেই নরসাইয়ার মুখে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের প্রশংসা ভালোভাবে নেয়নি দল।
সোমবার সিপিএমের সেন্ট্রাল কমিটি থেকে তিনমাসের জন্য বরখাস্ত করা হয় নরসাইয়া আদমকে। সিপিএমের পক্ষ থেকে বলা হয়, দলীয় নেতার আচরণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাই দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নরসাইয়াকে তিনমাসের জন্য বরখাস্ত করা হল। কিন্তু প্রশ্ন হল, মাত্র তিনমাসের জন্যই বরখাস্ত করা হল কেন? আরও বড় সাজা কি এক্ষেত্রে প্রাপ্য ছিল না তাঁর?
আসলে সাম্প্রতিক কালে বাম-রামের ‘ঘনিষ্ঠতা’ সম্পর্কে অজ্ঞাত নন কেউই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যখন বিজেপি বিরোধী ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া’ তৈরি হচ্ছে, তখনও দেখা মেলেনি বামেদের। আর মমতা নিজেও বারবার বলে থাকেন ‘এখন বাম-রাম সব এক হয়ে গেছে।’ তাই এমন দাবি করাই যায় যে, নরসাইয়ার মোদীবন্দনা নিয়ে মোটেই ভাবিত নয় সিপিএম। কেবল লোক দেখাতেই সেন্ট্রাল কমিটি থেকে তিন মাসের জন্য বরখাস্ত হল তাঁকে।