প্রতিবছরের মতো এবারও কলকাতার সেরা পুজোগুলিকে নিয়ে রেড রোডে আয়োজিত হতে চলেছে বর্ণাঢ্য কার্নিভালের। চলছে শেষ লগ্নের প্রস্তুতি। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শহরের সেরা পুজোগুলির প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা হবে। পুজো শেষে ফের ঠাকুর দেখার পর বাজে কদমতলা ঘাটে হবে বিসর্জন। উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্টজনেরা। আমন্ত্রিত থাকছেন একাধিক শিল্পপতিও। এবার ৯০টি পুজো কমিটি রেড রোডের কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটেয় নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের বিশেষ অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে কার্নিভাল। রাজ্য সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দফতর থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে যে সমস্ত পুজো কমিটি বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান পেয়েছে, তারা প্রত্যেকেই কার্নিভালে উপস্থিত থাকবে। বিগত বছরগুলির তুলনায় এই বছর বিদেশি অতিথির সংখ্যা অনেক বেশি। আবার সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণও যাতে বাড়ে, তার জন্য ২৮ হাজার আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়েছে। জমিদার বাড়ির আদলে মূল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মূল মঞ্চে থাকছে র্যাম্প। বিভিন্ন দেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর, বিশেষ অতিথিদের জন্য থাকছে আলাদা বসার বন্দোবস্ত। ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় কলকাতার রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। তারপর থেকে প্রতি বছর রাজ্য সরকারের তরফে এই কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। ২০২০ এবং ২০২১ সালে কোভিড অতিমারির কারণে বন্ধ ছিল কার্নিভাল। ফের ২০২২ সাল থেকে শুরু হয় এই পুজো শেষে ঠাকুর দেখা। তবে কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ার পর কার্নিভালের গুরুত্ব বেড়েছে আরও।
পাশাপাশি, রেড রোড জুড়ে যেসব পুজো কমিটি এই কার্নিভালে অংশ নেবে, তারা প্রত্যেকেই কয়েকটি ট্যাবলোয় নিজেদের থিম প্রদর্শিত করতে পারবে। এর সঙ্গে নিজেদের প্রতিমাও প্রদর্শিত করাতে পারবে পুজো কমিটিগুলি। একদিকে বিসর্জনের কার্নিভাল দেখতে বিপুল মানুষের সমাগম। অন্যদিকে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের দ্রোহের কার্নিভাল পালনের আহ্বান। যাতে কোনও অশান্তির সৃষ্টি না হয়, পুলিশ সেদিকে কড়া নজর রাখছে। এ প্রসঙ্গে সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ ভার্মা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আদালতের নির্দেশের কথাও মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, কার্নিভাল একটি সরকারি অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে এবং প্রতিমা নিরঞ্জনে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না, এ নিয়ে আগেই আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে পুরো এলাকা। দু’জন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার সার্বিকভাবে গোটা বিষয়টি তদারকি করবেন। তাঁদের সাহায্য করবেন যুগ্ম কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনাররা। প্রায় দেড় হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। বাজা কদমতলা ঘাটে দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে গঙ্গাতেও রিভার ট্রাফিক পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে কার্নিভালের জন্য মঙ্গলবার দুপুর থেকে খিদিরপুর রোড, কিংস ওয়ে, কুইনস ওয়ে, হসপিটাল রোড, রেড রোড, আকাশবাণীর সামনের রাস্তা যান চলাচলের জন্য বন্ধ থাকবে। কার্নিভাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে এই বিধিনিষেধ।