নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে বারবার ফুটে উঠেছে কর্মসংস্থানের বেহাল চিত্র। প্রকট হয়েছে বেকারত্ব। এই আবহেই ফের প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল, কাজ পাওয়ার উপযুক্ত প্রথাগত শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণই নেই ভারতের যুবসমাজের একটা বড় অংশের! ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী যাঁদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং প্রশিক্ষণ নেই, তাঁদের ‘নিট’ অর্থাৎ ‘নট ইন এডুকেশন, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং’ আখ্যা দিয়ে থাকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা। প্রতি বছর এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে তারা। ভারতে নিটের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেশি বলে সাম্প্রতিক রিপোর্টে উল্লেখ করেছে আইএলও। সংখ্যাটা প্রায় ২৫ শতাংশ। উদ্বেগজনক, কারণ ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম। ২০ শতাংশ। কিন্তু তারপর থেকে বাড়তে থাকে। কোভিডের কারণে যে এই প্রবণতা বাড়বে সেটা প্রত্যাশিত। কিন্তু কোভিডকাল কেটে যাওয়ার পর দু’বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি একেবারেই, বরং কর্মসংস্থানহীন, শিক্ষাহীন এবং প্রশিক্ষণহীন এই যুবসমাজের সংখ্যা আরও বেড়ে আগামী ৫ বছরের মধ্যে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ শতাংশও হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের।
প্রসঙ্গত, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাজেশনের এই রিপোর্টকে উল্লেখ করে অর্থ, বাণিজ্য, স্কিল উন্নয়ন মন্ত্রককে দ্রুত একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে বলেছে নীতি আয়োগ। জানা যাচ্ছে, এই প্রবণতায় রাশ টানার লক্ষ্যে এখন চাকরির থেকেও প্রশিক্ষণে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। ইন্টার্নশিপ কর্মসূচি এই লক্ষ্যেরই অঙ্গ। সেক্ষেত্রে একবার ইন্টার্নশিপে প্রবেশ করলে, চাকরি না পেলেও কাউকে প্রশিক্ষণহীন তকমা দেওয়া যাবে না। আর এভাবে আইএলও রিপোর্টে ভারতের অবস্থানে উন্নতি হবে। ২০২৩ সালের রিপোর্টে বলা হয়েছিল ভারতে যুব সমাজের সামগ্রিক বেকারত্বের হার প্রায় ১৪ শতাংশ। আশা করা হয়েছিল ২০২৫ সালে কমবে। কিন্তু সম্প্রতি আইএলও রিপোর্টে বলা হচ্ছে, বেকারত্বের সবথেকে বড় কারণ কাজ করার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি দেশের যুব সমাজের বিপুল অংশ। অর্থাৎ হয় শিক্ষা অথবা দক্ষতা। দুটির কোনওটাই নেই। আর সেই কারণেই এবার তথৈবচ অবস্থা কর্মসংস্থানের। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সরব হয়েছে একাধিক মহল।