দিনকাল যতই এগোচ্ছে, ততই তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা ‘এআই’। আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এহেন রমরমার কারণে বাড়ছে উদ্বেগ। এআইয়ের কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজ হারাবেন বলেই অনুমান অনেকের। তবে সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, সিংহভাগ মানুষকে সরিয়ে এআই দিয়ে কাজ করানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সেই পরিস্থিতির জন্য অর্থনীতি এখনও প্রস্তুত নয়। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, পারেনি। মানুষ যেভাবে কৌশল নির্ধারণ করে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়, তার বিকল্প কৌশল এআই এখনও দিয়ে উঠতে পারেনি। এআইয়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালায় তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস। সেখানে দেখা গিয়েছে, শিল্পকর্তারা বলছেন, ইন্টারনেট আসার পর ব্যবসায় যে পরিবর্তন, বলা ভালো সুবিধা বেড়েছিল, এআই তেমনই বা তার চেয়েও বেশি সুবিধা করে দেবে ব্যবসায়। ৫৪ শতাংশ শিল্পকর্তা তেমনই ভাবছেন। অন্যদিকে স্মার্টফোন বাজারে আসার পর, তা ব্যবসার কাজে যতটা সাহায্য করেছিল, এআই তার চেয়েও বেশি সাহায্যকারীর ভূমিকা নেবে, মনে করছেন ৫৯ শতাংশ শিল্পকর্তারা।
পাশাপাশি, সমীক্ষাটিতে দেখা গিয়েছে, কোনও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ফাইনান্স বা অর্থ বিভাগে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে ২৯ শতাংশ ক্ষেত্রে। মানবসম্পদ এবং বিপণন বা মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সেই হার ২৮ শতাংশ। তবে এআই যে ব্যবসার উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলছে, তা মেনে নিয়েছেন শিল্পকর্তারা। সমীক্ষাটিতে দেখা গিয়েছে, ৫৫ শতাংশ কর্তা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র এআইয়ের কারণে তাঁরা তাঁদের ব্যবসার রূপরেখা বা মডেল বদলে ফেলেছেন। কোথাও কোথাও পণ্য বা পরিষেবার ধাঁচও বদলাতে হয়েছে। তার কারণ, এআইয়ের যেমন উপকারিতা আছে, তেমন কিছু সমস্যাও আছে, মেনে নিয়েছেন তাঁরা। এতকিছুর পরও অধিকাংশ শিল্প সংস্থাকেই নানা জটিল আবহে ভরসা করতে হচ্ছে সেই মানবসম্পদের উপরই। ৬৫ শতাংশ উচ্চপদস্থ কর্তা, তাঁরা দীর্ঘদিন কোনও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানে রয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য যে কৌশলের দরকার হয়, তা পাওয়া যায় মানুষের কাছ থেকেই। তাদের চিন্তাভাবনার অভিনবত্ব, আগামী দিনে কী হতে পারে, সেই সম্পর্কে ধারণা থাকা বা কৌশলগত বুদ্ধি খাটানোর ক্ষমতা কখনও এআইয়ের মতো প্রযুক্তি দিতে পারে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।